পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৭৮
ধন্যমাণিক্য ও হোসেন শাহ

 চট্টল অধিকার করায় গৌড়ের নবাব ত্রিপুরা জয়ের সঙ্কল্প করিলেন। রায় কাচাগের জয়যাত্রায় ত্রিপুরা ক্রমেই গৌড়ের প্রতিপক্ষরূপে ঠেকিতে লাগিল। নবাব বিপুল সৈন্যবাহিনী সাজাইয়া গৌর মল্লিকের অধীনে এক অভিযান পাঠাইলেন। কুমিল্লাতে নবাব সেনার সহিত প্রথম সংঙ্ঘর্ষ হয়। যাহাতে মল্লিক আর কিঞ্চিৎ পূর্ব্বে যাইতে না পারেন তজ্জন্য ব্যবস্থা করা হইয়াছিল। কুকি রাজ্য জয়ে রায় কাচাগের মাথায় যে অদ্ভুত কৌশল খেলিয়াছিল, এখানেও তাহার কম হইল না। কুমিল্লায় নবাব সৈন্যের শিবির খাটান হইল, দেশের অবস্থা মল্লিকের জানা ছিল না, তাই যুদ্ধের চাতুরী বুঝিয়া উঠেন নাই। কুমিল্লার উজানে সোণামুড়ার পাদদেশে গোমতী বাঁধ দেওয়া হইয়াছিল, তিন দিন জল আটক রাখা হয়। তৃতীয় দিন রাত্রিকালে সহসা বাঁধ ভাঙ্গিয়া দেওয়ায় আচম্বিতে জল আসিয়া রণক্ষেত্র ভাসাইয়া ফেলিল, পাঠানেরা হাহাকার করিয়া উঠিল একেবারে সাঁতার জল। চণ্ডিগড়ে পূর্ব্বেই ত্রিপুর সৈন্য ওৎ পাতিয়া বসিয়াছিল, তাহারা সেই অবস্থায় পাঠানের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িক, ফলে গৌর মল্লিক কোনও রূপে শায়েস্তা খাঁর ন্যায় প্রাণ লইয়। পলাইলেন বটে কিন্তু তাঁহার পাঠান সৈন্যের মধ্যে কে বাঁচিল জানিবারও অবকাশ হইল না।

 গৌড়ের নবাব যখন এই পরাজয় কাহিনী শুনিতে পাইলেন, তাঁহার ক্রোধের সীমা রহিল না। হোসেন শাহ সেনাপতিদের নিয়া অনেক পরামর্শ করিলেন। তখন স্থির হইল হৈতন খাঁর