পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৯৭
গৌড়াধিপের পরাজয়

(৪)

গৌড়াধিপের পরাজয়

 জয়ন্তী যুদ্ধের পর শ্রীহট্টে কালনাজির স্থাপিত হইয়াছিল—এইবার কালনাজিরের ডাক পড়িল। কালনাজির বীর পুরুষ। মহারাজ তাঁহাকে প্রধান সেনাপতিরূপে চট্টলে পাঠাইয়া দিলেন। কালনাজির আসিয়া দেখেন ত্রিপুর সৈন্যের মধ্যে বড়ই উৎসাহের অভাব, সেনাপতিদের উঠাইয়া নেওয়ায় ইহারা দমিয়া গিয়াছিল। কালনাজির সৈন্যগণকে চাঙ্গা করিয়া তুলিলেন। তারপর ভীষণ সংগ্রাম বাঁধিল। নাজিরের আগমনে পাঠান সৈন্য কোমর বাঁধিয়া যুদ্ধে নামিল—অস্ত্রের ঝনৎকার ও বন্দুকের আওয়াজে কানে তালা লাগিয়াছিল। রক্ত নদী বহিয়া গেল, হাতিগুলি কালো মেঘের ন্যায় রণক্ষেত্র ছাইয়াছিল এবং মেঘনাদের ন্যায় মুহুর্মুহু গর্জ্জন করিতেছিল। নাজির সেনাপতি রণমদে মত্ত হইয়া ত্রিপুর সৈন্যের পুরোভাগে থাকিয়া যুদ্ধ চালনা করিতেছিলেন, তখন সন্ধ্যা ঘনীভূত হইয়াছে এমন সময়ে পাঠানের অস্ত্রাঘাতে নাজির প্রাণত্যাগ করিলেন। সেনানীর মৃত্যুতে ত্রিপুর সৈন্যের বিজয় উল্লাসে বাধা পড়িয়া গেল, পাঠানের জয়ধ্বনিতে দিগন্ত কম্পিত হইতে লাগিল। ত্রিপুরসেনা সন্ধ্যার অন্ধকারে কোথায় যে গা ঢাকা দিল তাহার খোঁজ পাঠানেরা আর লইল না। রণশ্রান্ত হইয়া তাহারা