পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপর্ব্ব।]
গণেশের ধ্যান—খর্ব্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদন্ং লম্বোদরং সুন্দরং,
২১

তাহার গর্ভেতে যেই জন্মিবে কুমার।
তোমা সবাকারে সেই করিবে উদ্ধার॥
শুনি অন্তর্দ্ধান হৈল যত পিতৃগণ।
ডাকিয়া সূন্যতা তবে বলিল বচন॥
বিভা করি জারৎকারু জন্মাও সন্ততি।
বংশ হৈলে হইবেক সবার সদগতি॥
যেই বেনামূল সবে ছিলেম ধরিয়া।
তুমি আছ তেঁই মূল আছে ত লাগিয়া॥
মূষিক খুঁড়িতেছিল, মূষিক সে নয়।
মূষারূপে আপনি সে ধর্ম্ম মহাশয়॥
তাহা শুনি জরৎকারু করিল গমন।
বহু দেশ-দেশান্তরে করয়ে ভ্রমণ॥
পিতৃগণ-আজ্ঞা শুনি চিন্তে অণুক্ষণে।
কন্যা যাচি দিবে কেহ নাহিক ভূবনে॥
মহাবনে প্রবেশ করিল জরৎকার।
কন্যা কার আছে দেহ বলে তিনবার॥
আছিল তথায় বাসুকীর অনুচর।
মুনির সন্দেশ কহে বাসুকী গোচর॥
এত শুনি বাসুকী যে আনন্দ অপার।
ভগিনী সহিত গেল যথা জরৎকার॥
মুনি প্রতি ফণিবর করে নিবেদন।
আমার ভগিনী মুনি করহ গ্রহণ॥
মুনি বলে সেই কন্যা কিবা নাম ধরে।
সত্য কহ মিথ্যা না ভাণ্ডাও মোরে॥
মোর নামে হয় যদি ভগিনী তোমার।
বিবাহ করিব আমি কৈনু অঙ্গীকার॥
বাসুকী বলেন নাম ধরে জরৎকারী।
তোমার লাগিয়া জন্ম ল'য়েছে সুন্দরী॥
যতনে রেখেছি আমি তোমারি কারণে।
তব আজ্ঞা পেয়ে তবে আনি এত দিনে॥
এত বলি কন্যা দিয়া গেল ফণিবর।
শুনি নাগলোকে হইল আনন্দ বিস্তর॥
মহাভারতের কথা সুধা হৈতে সুধা।
শ্রবণে শুনিলা যাবে যত ভবক্ষুধা॥
বহু চিত্র কথা যত কাশী-বিচরিত।
অমর-কিন্নর-নর-নাগের চরিত॥

বিবিধ বিপদ খণ্ডে যাহার শ্রবণে।
আত্মশুদ্ধি বংশবৃদ্ধি পাপ-বিমোচনে॥
স্ববাঞ্ছিত ফল ইথে পায় নরগণ।
হরিপদে মতি হয় জন্মে দিব্যজ্ঞান॥


গরুড়াদি নাগগণের উৎপত্তি-বিবরণ ও অরুণের জন্ম।

মুনিগণ বলে কহ ইহার কারণ।
ভগিনীকে দিল নাগ কোন প্রয়োজন॥
মুনি তরে কি কারণে কন্যার উৎপত্তি।
বিস্তারিয়া সেই কথা কহ পুনঃ সৌতি॥
সৌতি বলে অবধান কর মুনিগণ।
বাসুকী ভগিণী দিল যাহার কারণ॥
দক্ষের দুহিতা কদ্রু বিনতা সুন্দরী।
স্বামী কশ্যপেরে দোঁহে তুষে সেবা করি॥
তূষ্ট হইয়া কহা মুনি মাগ দোঁহে বর।
ইহা শুনি কদ্রু বলে যুড়ি দুই কর॥
সহস্রেক নাগ হবে আমার নন্দন।
এই মোর বাঞ্ছা, পূর্ণ কর তপোধন॥
বিনিতা মাগিল বর কশ্যপের পায়।
দুই গোটা পুত্র মোরে দেহ মহাশয়॥
কদ্রু পুত্র হ'তে বলাধিক সে নন্দন।
হাসিয়া কশ্যপ বর দিল ততক্ষণ॥
মুনি বরে দুই জনে হৈল গর্ভবতী।
দোঁহে আশ্বাসিয়া বনে গেল মহামতি॥
কত দিনে দুই জনে প্রসব হইল।
সহস্রেক ডিম্ব তবে কদ্রু প্রসবিল॥
দুই ডিম্ব প্রসবিল বিনতা সুন্দরী।
রাখিল সকল ডিম্ব স্বর্ণপাত্রে ভরি॥
পঞ্চশত বৎসরে জন্মিল নাগগণ।
মুনি বরে পায় কদ্রু সহস্র নন্দন॥
বিনতা দেখিয়া তাপ হৃদিয়ে ভাবিল।
এককালে উভয়ের ডিম্ব জনমিল॥
সহস্র পুত্রের কদ্রু জননী হইল।
কি হেতু না জানি মোর পুত্র না জন্মিল॥