পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবের ধ্যান--ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজত গিরি নিভং চারুচন্দ্রা বতংসং

 সৌনকাদি মুনি সূতপুত্রে জিজ্ঞাসিল।
 আস্তিকের উপাখ্যান সকল কহিল।।
 কশ্যপাদি মুনি ছিল যজ্ঞের সদনে।
 কেন্ কোন্ প্রসঙ্গ করিল সেই স্থানে।।
 কোন হেতু আমার প্রপিতামহগণ।
 ভাই ভাই যুদ্ধ করি হইল নিধন।।
 আপনি আছিলে তুমি সকল সময়।
 তবে কেন বিবাদে হইল সব ক্ষয়।।
 ব্যাস বলিলেন তাহা বলিতে বিস্তার।
 শুনিবারে ইচ্ছা যদি হইল তোমার।।
 দেখহ আমার শিষ্য শ্রীবৈশম্পায়ন।
 এ সব কথায় ইনি বড় বিচক্ষণ।।
 যাহা জিজ্ঞাসিবা তাহে কহিবে সকল।
 এত বলি গেলা ব্যাস আপনার স্থল।।
 তবে শ্রীজনমেজয় ব্যাসের বচনে।
 কৃষ্ণবর্ণ চন্দ্রাতপ করে ততক্ষণে।।
 তার তলে বসি রাজা সহ মন্ত্রীগণ।
 চারি জাতি নগরের শ্রেষ্ঠ যতজন।।
 নান রত্ন দিয়া মুনিরাজে কৈল পূজা।
 বিনয় বচনে তবে জিজ্ঞাসিল রাজা।।
 মহাভারতের কথা অমৃত-সমান।
 কাশীরাম দাস কহা শুনে পূণ্যবাণ।।
 তবে শ্রীজনমেজয় মুনিরে লইয়া।
 জিজ্ঞাসিল পূণ্যকথা বিনিয় করিয়া।।
 জগতে বিখ্যাত যে বৈশম্পায়ণ মুনি।
 কহিতে লাগিল তত্ত্ব ভারত-কাহিনী।।
 খণ্ডয়ে অশেষ পাপ যাহার শ্রবণে।
 সকল যজ্ঞের ফল পায় ততক্ষণে।।
 বৈশ্য শূদ্র শুনিলে খণ্ডয়ে সকল দুঃখ।
 অপুত্রক শুনিলে দেখয়ে পুত্রমুখ।।
 বাজভয়, শত্রুভয়, পথিভয় আদি।
 বিবিধ দূর্গতি খণ্ডে আর যত বিধি।।
 মোক্ষশাস্ত্র বলি সেই ব্যাসের রচিত।
 সম্পূর্ণ সকল রসে করিল বর্ণিত।।
 ইহার শ্রবণে যত সুখ লভে নর।
 তার সম ফল নাহি স্বর্গের উপর।।
 ইহলোকে আয়ূর্যশ আন্তে স্বর্গে যায়।
 ধর্ম্ম অর্থ কাম মোক্ষ চতুর্ব্বর্গ পায়।।
     --------
 মহাভারত কথারম্ভ।
   
   সৌতি বলে শুন সবে অদ্ভুত কথন।
 যজ্ঞস্থানে ব্যাস মুনি আইল যখন।।
 ব্যাস দেখি আনন্দিত জনমেজয় রাজা।
 পাদ্য অর্ঘ্য দিয়া তাঁরে করিলেন পূজা।।
 আমারে বলহ মুনি ইহার কারণ।
 চিরদিন শুনিতে উৎসুক মম মন।।
 শুচি হৈয়া মন দিয়া যে জন শুনয়।
 ব্যাসের বচন ইথে নাহিক সংশয়।।
 এক লক্ষ শ্লোকে এই ভারত নির্ম্মাণ।
 নানা ধর্ম্ম পরিপূর্ণ বিচিত্র আখ্যান।।
 হরি হরি শব্দ করি শুন একচিতে।
 প্রথমেতে সবাকার রক্ষা যেই মতে।।
 পৃথিবীর মধ্যে ক্ষত্র হইল অপার।
 মহামত্ত হৈয়া সবে করে কদাচার।।
 লোকহিংসা সহিতে না পারি জনার্দ্দন।
 ভৃগুবংশে অবতার হ'লেন তখন।।
 করেতে কুঠার জমদগ্নির কুমার।
 নিঃক্ষত্রিয় করিল ক্ষিতি তিন সপ্তবার।।
 ক্ষত্র বলি ক্ষিতি মধ্যে না রাখিল নাম।
 মারিল দুগ্ধের শিশু ক্ষত্র যার নাম।।
 ব্রাম্ভণেরে রাজ্য দিয়া গেল তপোধন।
 বিপ্রগৃহে প্রবেশিল ক্ষত্রিয়-স্ত্রীগণ।।
 রাজকর্ম্মে বিপ্রগণে সম্ভব না হয়।
 ক্ষত্রগর্ভে বিপ্রজাত হইল তনয়।।
 ক্ষত্র-স্ত্রীতে বিপ্রবীর্য্যে হইল কুমার।
 পুনঃ ক্ষিতিমধ্যে হৈল ক্ষত্রিয় প্রচার।।
 নিষ্পাপ হইল সবে পরম ধার্ম্মিক।
 ধর্ম্মেতে বাড়িল বংশ হইল অধিক।।