এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ত্রিশূলং দক্ষিণে ধ্যেয়ং খড়্গং চক্রং ক্রমাদধঃ।
যথাযোগ্য ভক্ষ্য ভোজ্য বসন-ভূষণ। প্রত্যেকে সবারে রাজা কৈল নিয়োজন।। দবযানী হইল প্রধাণ পাটেশ্বরী। হেনমতে ক্রীড়া করে দিবস শর্ব্বরী।। ধরিল প্রথম গর্ভ শুক্রের নন্দিনী। দশ মাসে প্রসব হইল দেবযানী।। দ্বিতীয় চন্দ্রের প্রায় হইল নন্দন। নন্দনের যদু নাম রাখিল রাজন।। কতদিন পরে দেখ দৈবের যে গতি। দৈত্যকন্যা শর্মিষ্ঠা হইল ঋতুমতী।। ঋতুস্নান করি কন্যা চিন্তিত হৃদিয়ে। স্বামীহীনা হইলাম কর্ম্ম দুরাশয়ে।। বৃথা জন্ম গেল মম এ নব যৌবনে। পুত্রবর মাগি লব যযাতি রাজনে।। দেবযানী সখী মম হয় ত' ঈশ্বরী। তাঁহার ঈশ্বর হৈলে মম অধিকারী।। যদি পাই একান্তে নৃপতি দরশন। ঋতুদান মাগি লব এই লয় মন।। যযাতি যে সত্যব্রত বিখ্যাত সংসারে। যে কিছু যে চাহে তাহা অন্যথা না করে।। এতেক চিন্তিতে দেখ দৈবের লিখন। আইল নৃপতি তথা বিহার কারণ।। হেনকালে শর্মিষ্ঠা রাজারে একা দেখি। সন্নিকট হইয়া প্রণমিল শশীমুখী।। কৃতাঞ্জলি হইয়া সম্মুখে দণ্ডাইল। বিনয়পূর্ব্বক কন্যা কহিতে লাগিল। উপেন্দ্র মহেন্দ্র চন্দ্র যোগেন্দ্রের প্রায়। সর্ব্বগুণ নৃপতি তোমারে গণি তায়।। আমারে রাজন তুমি জান ভালমতে। শুনহ প্রার্থনা এক কহি যে তোমাতে।। কামভাবে তোমায় না করি নিবেদন। ঋতুরক্ষা কর মোর ধর্ম্মের কারণ।। রাজা বলে ইহা না কহিও কদাচন। শুক্রের বচন নাহি তোমার স্মরণ।। দেবযানী-বিবাহে বলিল বারে বারে। শয়নে কদাচ না ডাকিবা শর্মিষ্ঠারে।। শুক্রের বচন কেবা খণ্ডাইতে পারে। কি শক্তি আমার বল পরশি তোমারে।। কন্যা বলে রাজা তুমি পরম পণ্ডিত। তোমারে বুঝাব আমি না হয় উচিত।। বিবাহের কালে সর্ব্ব্ধন-অপহরে। কৌতুকেতে আর নারী সহিত বিহারে।। প্রাণের সংশয়ে যদি মিথ্যা কেহ কহে। এই পঞ্চস্থানে মিথ্যা-পাপ হেতু নহে।। দেবযানী তোমারে বরিল যেই ক্ষণে। আমার বরণ রাজা হৈল সেই দিনে।। একে সখী দেবযানী দ্বিতীয়ে ঈশ্বরী। তাঁর ভর্ত্তা তুমি মোর হৈলা অধিকারী।। রাজা বলে নহে এই ধর্ম্মের বিচার। কখনই মিথ্যা বাক্য না শোভে রাজার।। লোকে মিথ্যা পাপ কৈলে দণ্ড করে রাজা। রাজা মিথ্যাবাদী হৈলে লোকে নাহি পূজা।। কন্যা বলে রাজা নহে অধর্ম্ম-আচার। ভার্য্যা-পুত্র-দাসেতে স্বামীর অধিকার।। ঈশ্বরী-ঈশ্বর তুমি আমার ঈশ্বর। সে কারণে তোমারে মাগিনু পুত্রবর।। কন্যার বচন শুনি সতধর্ম্মনীতি। হৃদয়ে ভাবিয়ে তবে কহে নরপতি।। রাজা বলে পূর্ব্বে করিলাম অঙ্গীকার। যেই যাহা মাগে দিব প্রতিজ্ঞা আমার।। সে কারণে তোমার পুরাব অভিলাষ। এইঅ বলি গেল রাজা শর্মিষ্ঠার পাশ।। ঋতুদান শর্মিষ্ঠারে দিয়া নরপতি। কেহ না জানিল গেল আপন বসতি।। রাজার ঔরস্র শর্মিষ্ঠার গর্ভ হৈল। দশমাস দশদিনে পুত্র প্রসবিল।। শর্মিষ্ঠার পুত্র হৈল লোকে হৈল শব্দ। বার্ত্তা পেয়ে দেবযানী হইলেন স্তব্ধ।। আশ্চর্য্য শুনি যে পুত্র হইল কিমতে। শর্মিষ্ঠার গৃহে তবে চলিল ত্বরিতে।। দেবযানী বলে সখী করিলা কি কর্ম্ম। কার দ্বারা হইল তব পুত্রের জন্ম।।