এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
খেটকং পূর্ণচাপঞ্চ পাশ-মঙ্কুশ মুর্দ্ধতঃ।
শুক্রের সম্মুখে গিয়া হৈল উপনীত। প্রণাম করিয়া কহে রাজার চরিত।। অবধান কর পিতা মম নিবেদন। অধর্ম্মে প্রবৃত্ত হৈল যযাতি রাজন্।। তোমার নিয়ম বাক্য করিয়া হেলন। বৃষপর্ব্বকন্যাসহ করিল রমণ।। তিন পুত্র জন্মাইল তাহার উদরে। দুর্ভাগা করিল মোরে রাজা অবিচারে।। আমার উদরে দুই পুত্র জন্মাইল। এখন তোমার বাক্যে হেলন করিল।। কন্যার বচন শুনি ভৃগুর নন্দন। ক্রোধ করি রাজারে বলিল ততক্ষণ।। সর্ব্ব্ধর্ম্ম জ্ঞাত তুমি পরম পণ্ডিত। মম বাক্য লঙ্ঘ রাজা এ কোন্ বিহিত। গুরুজনে লঙ্কঘ রাজা করি অহঙ্কার। এই পাপে জরা অঙ্গ হইবে তোমার।। শুনিয়া শুক্রের শাপ কম্পিত-হৃদয়। করযোড় করি রাজা বলিছে বিনয়।। কামভাবে শর্ম্মিষ্ঠাকে না করি রমণ। ঋতুদান শর্ম্মিষ্ঠা যে করিল প্রার্থন।। সে কারণে তাকে করিলাম ঋতুদান। না করিলে নাহি পাপ তাহার সমান।। নপুংসক হ'য়ে জন্ম হয় ক্ষিতি তলে। নরকের মধ্যে গিয়া পড়ে অন্তকালে।। ঋতুদান করিলাম করি ধর্ম্মভয়। অগ্রে মম অঙ্গীকার জান মহাশয়।। যেই যাহা মাগে তাহা না করিব আন। সে কারণে দিনু যে মাগিল ঋতুদান।। শুক্র বলে ধর্ম্মভয়ে করিলা বিহার। মম বাক্যে ভয় নাহি এত অহঙ্কার।। এতেক বলিবা মাত্র ভৃগুর নন্দন। রাজার শরীরে জরা হইল তখন।। অশক্ত হইল রাজা শুক্ল হৈল কেশ। মুখেতে না স্ফুরে বাক্য হৈল বৃদ্ধবেশ।। আপনার অঙ্গ দেখি নৃপতি বিস্ময়। যোড়হস্তে কহে পুনঃ করিয়া বিনয়।। যুবভাবে তৃপ্ত নাহি, না পূরে কামনা। তব কন্যা দেবযানী প্রথম যৌবনা।। হইলাম বঞ্চিত এ সংসারের সুখে। কৃপায় শাপান্ত প্রভু আজ্ঞা কর মোকে।। শুক্র বলে মম বাক্য না যায় খণ্ডন। ভোগ করিবারে রাজ্য যদি আছে মন।। আপনার জরাবস্থা দিয়া অন্যজনে। সাংসারিক সুখভোগে করহ আপনে।। রাজা বলে আছে মম পঞ্চ যে কুমার। যেই জরা লবে তারে দিব রাজ্য ভার।। শুক্র বলে জরা লইবেক যেই জন। দীর্ঘ আয়ু হবে সেই রাজ্যের ভাজন।। বংশবৃদ্ধি হবে সেই রাজ্য হবে রাজা। পরম পণ্ডিত হবে বলে মহাতেজা।। শুক্রের পাইয়া আজ্ঞা যযাতি রাজন। দেবযানীসহ দেশে করিল গমন।। যযাতি-চরিত্রকথা শুনিতে অমৃত। পাঁচালী প্রবন্ধে কাশীদাস বিরচিত।।
------
যযাতির যৌবন প্রাপ্তি এবং পুরুর জরা গ্রহণ
দেশে আসি নৃপতি বসিল সিংহাসনে। জ্যেষ্ঠপুত্র যদুরে বলিল ততক্ষণে।। শুক্রশাপে জরা বাপু হইল শরীরে। যৌবনের ভোগে মম মন নাহি পুরে।। জ্যেষ্ঠ পুত্র হও তুমি পরম পণ্ডিত। খণ্ডিতে পিতার দুঃখ হয়ত উচিত।। সে কারণে মোর জরা লহ রে শরীরে। তোমার যৌবন পুত্র দেহ-ত আমারে।। সহস্র বৎসরে পুত্র পাইবে যৌবন। এত শুনি যদু হৈল বিরস বদন।। জরা সম দুঃখ পিতা নাহিক সংসারে। অন্নপানহীন শক্তি না থাকে শরীরে।। শরীর কুৎসিত হয় লোক উপহাসে। এ জরা লইতে মম চিত্তে না প্রকাশে।। শুনিয়া হইল ক্রূদ্ধ যযাতি রাজন্। জ্যেষ্ঠপুত্র হ'য়ে তুমি হৈলা অভাজন।।