পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেব্যস্তু দক্ষিণন পাদং সমং সিংহোপরি স্থিতং।

 পান কৈলে জীয়ে দশ সহস্র বৎসর।
 শুনিয়া কহুল কন্যা স্বামীর গোচর।।
 নরলোকে সখী এক আছয়ে আমার।
 উশীনর কন্যা জিতবতী নাম তার।।
 তাহার কারানে তুনি গাভী দেহ মোরে।
 যদ্যপি থাকয়ে স্নেহ আমার উপরে।।
 বিনয় করিয়া কন্যা বলে বারে বারে।
 স্ত্রীবশ হইয়া বসু ধরিল গাভিরে।।
 ভার্য্যা-বোলে গাভী ধরে পাছে না গণিল।
 কামদুঘা ধেনু লৈয়া নিজ ঘরে গেল।।
 কতক্ষণে মিনিবর আইল আশ্রমে।
 গাভী না দেখিয়া মুনি তপোবনে ভ্রমে।।
 না পাইল গাভী মুনি ভ্রমিল বিস্তর।
 কেবা নিল গাভী মুনি চিন্তিত-অন্তর।।
 ধ্যান করি দেখে তবে বরুণ-নন্দন।
 জানিল হরিল গাভী বসু অষ্টজন।।
 ক্রোধেতে বশিষ্ঠ শাপ দিল ততক্ষণে।
 নরযোনি জন্ম লহ বসু অষ্টজনে।।
 বশিষ্ঠ দিলেন শাপ শুনি বসুগণে।
 করযোড়ে স্তুতি করে মুনির সদনে।।
 মুনি বলে বাক্য মম না হয় খণ্ডন।
 বৎসরেক গর্ভবাস রবে সাতজন।।
 বৎসরে বৎসরে ক্রমে হইবে মুকতি।
 সবে না হইবে তাহে একই সুকৃতি।।
 তোমা সবা মধ্যে গাভী লৈল যেইজন।
 নরলোকে রহি মুক্ত হবে সেইজন।।
 মুনিশাপে বসুগণ হইয়া কাতর।
 স্তুতি করি আমারে মাগিল এই বর।।
 জন্মমাত্র আমা সবা ডুবাইবে জলে।
 অঙ্গীকার করিলাম তা সবার বোলে।।
 সে কারণে ভার্য্যা আমি হলেম তোমার।
 এই ত কুমার রাজা বসু-অবতার।।
 পালন করিয়ে সুতে যুবক হইলে।
 তোমারে আনিয়া দিব কত দিন গেলে।।
 এত বলি সুত লৈয়া হৈল অন্তর্দ্ধান।
 কান্দিতে কান্দিতে রাজা গেল নিজ স্থান।।
 

গঙ্গা কর্ত্তৃক দেবব্রতকে শান্তনুর করে অর্পণ ও দেবব্রতের যুবরাজ হওন।

   গঙ্গার শোকেতে রাজা হইল কাতর।
 গঙ্গার ভাবনা বিনা নাহি চিন্তা আর।।
 বিবাহ না করে রাজা নবীন যৌবনে।
 দান ধ্যান তপ জপ করে নিশি দিনে।।
 বছর শতেক ষষ্টি গেল এই মতে।
 একদিন গেল রাজা গঙ্গার তটেতে।।
 আচম্বিতে দেখে রাজা গঙ্গা বসি নীরে।
 ছয় ঋতু বহে সদা গঙ্গা দেব ঘিরে।।
 তার পাশে তেজোদীপ্ত আছে এক বীর।
 হাতে ধনু শরাসন উজ্জ্বল শরীর।।
 তদন্ত জানিতে রাজা কাছে সেই গেল।
 রাজা হেরি মহাবীর জলেতে ডুবিল।।
 পূর্ব্ব মূর্ত্তি ত্যাজি গঙ্গা অন্যরূপ ধরি।
 দেবব্রতে অগ্রে করি এলো তট'পরি।।
 ভাগীরথী তবে ডাকি নৃপে চাহি বলে।
 অষ্টম কুমারে নিয়ে যাও রাজ্যে চলে।।
 দেবব্রত নাম ধরে তনয় তোমার।
 বশিষ্ঠের আথানে শিক্ষা অস্ত্র হ'ল তার।।
 জানে অষ্ট বিদ্যা ভৃগু রামের সমান।
 দৈত্যগুরু দেবগুরু সম শাস্ত্রে জ্ঞান।।
 তোমারে দিলাম পুত্র লও মহারাজ।
 অভিষেক করে পুত্রে শান্তনু ভূপতি।।
 কিছুদিন পরে নৃপ মৃগয়া কারণ।
 কালিন্দীর তীরে করে মৃগ অণ্বেষণ।।
 গন্ধে আমোদিত চারিভিতে চায়।
 কিসের সুগন্ধ তাহা না জানিল রায়।।
 গন্ধ অনুসারে তবে যায় নরপতি।
 আচম্বিতে নৌকাপরে দেখিল যুবতী।।
 পরমা সুন্দরী কন্যা জিনি বিদ্যাধরী।
 কিরণে উজ্জ্বল করে কালিন্দীর বারি।
 কন্যা দেখি নৃপতিরে পীড়িল মদন।
 আগু হইয়া কন্যা প্রতি জিজ্ঞাসে রাজন।।