পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে।।

 কুলের অন্তক রাজা এ পুত্র তোমার।
 ইহাকে পালিলে দুঃখ পাইবা অপার।।
 নিজ কুলহিত এবে চিন্তহ রাজন।
 এক উন হউক তব শতেক নন্দন।।
 কুলের কারণ রাজা ত্যাজি একজন।
 সুত ত্যাগ কর রাজা রাজ্যের কারণ।।
 এতেক বচন যদি বিদুর বলিল।
 পুত্রস্নেহে ধৃতরাষ্ট্র হেলন করিল।।
 তবে আর উনশত হইল নন্দন।
 হেনমতে হৈল ভাই একশত জন।।
 একশত পুত্র হৈল কন্যা নাহি গণি।
 শুনি মুনিবরে জিজ্ঞাসিল নৃপমণি।।
 আপনি বলিলা ব্যাসদেবের যে বরে।
 একশত পুত্র হবে গান্ধারী-উদরে।।
 অধিক কন্যা হইল কিসের কারণ।
 ইহার বৃত্তান্ত মোরে কহ তপোধন।।
 মুনি কহে শুন তত্ত্ব শ্রীজনমেজয়।
 যখন বিভাগ করে ব্যাস মহাশয়।।
 সতী পতিব্রতা দেবী সুবল-নন্দিনী।
 মনেতে বাঞ্ছিল এক কন্যা দেহ মুনি।।
 শুনিয়াছি স্ত্রীলোকের কন্যার পীরিত।
 দানেতে অক্ষয় স্বর্গ আছে হেন নীত।।
 শত পুত্র বর দিল ব্যাস মহামুনি।
 নাহিক সন্দেহ পুত্র হইবে এখনি।।
 কায়মনোবাক্যে যদি আমি হই সতী।
 পতিব্রতা হই আমি পতি মম গতি।।
 ব্রাম্ভণেরে গাভী দিয়া থাকি কোটি কোটি।
 তবে মম ইথে কন্যা হবে এক গুটি।।
 ব্রত তপ ক'রে থাকি গুরুর সেবন।
 যদি কভু পূজে থাকি দেব দ্বিজগণ।।
 গান্ধারী মানস আর বিধির সৃজন।
 মাংসপিণ্ড ব্যাসদেব করিল সিঞ্চন।।
 একে একশত ভাগ মাংসপিণ্ড হৈল।
 দেখি মহামুনি ব্যাস গান্ধারীকে কৈল।।
 আমার বচন বধূ কভু মিথ্যা নয়।
 এই দেখ হইলেক শতেক তনয়।।
 একখানি অধিক যে সুবল-নন্দিনী।
 তোমার মানস হ'তে হ'ল একখানি।।
 শুনি হরষিত হৈল সুবল-দুহিতা।
 সে কারণে অধিক হৈল এক সূতা।।
 অন্যা ধৃতরাষ্ট্রভার্য্যা বৈশ্যের কুমারী।
 বহু সেবা ধৃতরাষ্ট্রে করিল সুন্দরী।।
 তাহার উদরে হইল একই নন্দন।
 যুযুৎসু বলিয়া নাম জানে সর্ব্বজন।।
 হেনমতে একত্রেতে শত সহোদর।
 সবে মহাবলবন্ত পরম সুন্দর।।
 বিবাহ করিল সবে রাজার কুমারী।
 জয়দ্রথে সমর্পিলা দুঃশলা সুন্দরী।।
 কৌরবের জন্মকথা কহিলাম সব।
 বলি শুন পাণ্ডবের যেমতে উদ্ভব।।
        -----
   মৃগরূপী ঋষিকুমারের প্রতি পাণ্ডুর শরাঘাত।
 চিরকাল বৈসে পাণ্ডু বনের ভিতর।
 সঙ্গে দুই ভার্য্যা আর কত সহচর।।
 নিরন্তর ভ্রমে পাণ্ডু মৃগ অন্বিষণে।
 পর্ব্বত-কন্দর ঘোর মহা শালবনে।।
 সিংহ ব্যাঘ্র হস্তী খড়গী ভল্লূক শূকর।
 পাইয়া পাণ্ডুর শব্দ যায় বনান্তর।।
 হেনমতে একদিল দেখে নরবর।
 হরিণযূথের মধ্যে মৃগ একেশ্বর।।
 কিন্দম নামেতে সেই ঋষির কুমার।
 মৃগরূপ ধরি করে মৃগীকে শৃঙ্গার।।
 মৃগ দেখি কুরুপুত্র প্রহারিল শর।
 তীক্ষ্ণশরে ভেদিল ঋষির কলেবর।।
 শরাঘাতে ঋষিপুত্র করে ছটফটি।
 মৃগীর উপর হইতে ভূমে পড়ে লুটি।।
 ডাক দিয়া ঋষিপুত্র পাণ্ডু প্রতি বলে।
 ধার্ম্মিক পণ্ডীত হৈয়া কি কর্ম্ম করিলে।।
 মূর্খ দুরাচার যেই হিংসা করে পরে।
 বড় শত্রু হইলে এ সময় না মারে।।
 পাণ্ডু বলে মৃগ তুমি নিন্দ কি কারণ।
 ক্ষত্রধর্ম্ম মৃগ মারি পাই হে যখন।।