এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
।
ধরিয়া মোহিনী বেশ ভাণ্ডে সবাকারে।। আপন স্বভাব কভু ছাড়িতে না পারে। সময় পাইলে আমা পারে মারিবারে।। তাহার ভ্রাতার বৈরী আমি ইহা মনে। আমার সংহতি এ চলিল সে কারণে।। এক চড়ে করি তোরে ভ্রাতার সংহতি। এত বলি মারিবারে যায় মহামতি।। যুধিষ্ঠির বলিলান ভীম শুন আর। অবধ্য স্ত্রীজাতি কেন করিবে সংহার।। করিলে সংহার অবহেলে হিড়িম্বার। তোমা বধিবস্রে শক্তি আছে কি ইহার।। যুধিষ্ঠির যতনে রহিল বৃকোদর। হিড়িম্বা কুন্তীরে কহে হইয়া কাতর।। কায়মনোবাক্যে মম সত্য অঙ্গীকার। তোমা বই গুরু মোর পতি নাহি আর।। হ'য়ে আমি অজ্ঞান হইনু। আপন কুলের ধর্ম্ম ভ্রাতৃ ত্যাগ কৈনু।। সব ত্যাজি ভজিলাম তোমার নন্দনে। এক্ষণে অনাথা আমি নিলাম শরণে।। শরণাগতেরে ক্রোধ না হয় উচিত। আপনি করহ দয়া দেখিয়া দুঃখিত।। সদাই সেবিব আমি তোমার চরণে। কভু সঙ্কটেতে আমি উদ্ধারিব বনে।। বৃকোদরে। প্রাণ তোমার গোচরে।। কৃতাঞ্জলি করি আমি করি গো বিনয়। হইবে নিশ্চয়।।
ধর্ম্মের পাইয়া আজ্ঞা অতি হৃষ্টমন। ভীমে ল'য়ে হিড়িম্বা চলিল ততক্ষণ।। শূণ্যপথে লইয়া চলিল নিশাচরী। নানা বন উপবনে ভ্রমে ক্রীড়া করি।। যথা মন করে, তথা যায় মুহুর্ত্তেকে। নদ নদী মহাগিরি ভ্রময়ে কৌতুকে।। নিত্য নিত্য নব বেশ ধরে অনুপম। হেনমতে রতিক্রীড়া করে অবিশ্রাম।। কতদিনে ঋতুযোগে হৈল গর্ভবতী। ভয়ঙ্কর মুর্ত্তি পুত্র হৈল উৎপত্তি। জন্মমাত্র যুবক হইল মহাবীর। যক্ষ রক্ষ সুরাসুরে বিপুল শরীর।। বিবিধ বরণ ঘট কচ স্থুলাকার। ঘটোৎকচ নাম তেঁই ভীমের কুমার।। মহাবলবান হৈল হিড়িম্বানন্দন। ইন্দ্রের একাঘ্নী শক্তি যে হবে ভাজন।। ঘটোৎকচ মাতৃ সহ মন্ত্রণা করিয়া। কৃতাঞ্জলি কহে দোঁহে দণ্ডবৎ হৈয়া।। আজ্ঞা কর যাব মোরা আপন আলয়। স্মলিলে আসিব এই রহিল নিশ্চয়।। আজ্ঞা পেয়ে মাতা পুত্ত্রে করিল গমন। উত্তর দিকেতে গেল আপন ভবন। পাণ্ডবেরা চলিলেন লইয়া জননী। এক স্থানে না থাকেন কাটান রজনী।। পথে লোকজন দেখি লুকায়েন বনে। শীঘ্রগতি যান যথা কেহ নাহি জানে।। ত্রিগর্ত্ত পাঞ্চাল মৎস্যাদিক যত দেশ। ভ্রমিলেন বহুক্লেশ করিয়া বিশেষ।। হেনমতে ভ্রমেণ যে পাণ্ডুপুত্রগণ। আচম্বিতে আইলেন ব্যাস তপোধন।। ব্যাসে দেখি কুন্তীদেবী পুত্রের সহিতে। কৃতাঞ্জলি প্রণমিয়া দাঁড়ান অগ্রেতে।। ব্যাসের সাক্ষাতে কুন্তী করেন ক্রন্দন। বহু বিলাপিয়া দেবী কহেন বচন।। নিবর্ত্তিয়া তাঁরে ব্যাস কহিলেন বাণী। আমারে কি কহ ইহা আমি সব জানি।।