এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
মতিদং বরদাঞ্চৈব সর্ব্বকাম ফলপ্রদাং।
যোড়হাতে স্তুতি করে যত ক্ষত্রগণে। ব্রাম্ভণীরে স্তুতি করে বিনয় বচনে।। পিতৃ-পিতামহ সর্ব্ব হইল সংহার। মহাক্রূদ্ধ হৈল তবে ভৃগুর কুমার।। মহাদুষ্ট ক্ষত্রগণ কৈল অবিচার। অনাথের প্রায় দ্বিজ করিল সংহার।। বিধাতার দুষ্ট কর্ম্ম জানিনু এক্ষণ। এই হেতু বিনাশ করিব ত্রিভূবন।। এত চিন্তি তপস্যা করয়ে ভৃগুবর। অনাহারে তপ ষাটি সহস্র বৎসর।। দেবগণ মিলি যুক্তি করিল তখন। নিবারণ হেতু পাঠাইল সর্ব্বজন।। ঔর্ব্ব প্রতি পিতৃগণ বলিল বচন। এত ক্রোধ কর বাপু কিসের কারণ।। আমা সবা হেতু দুঃখ ভাবহ অন্তরে। আমা সবে মারিবারে কার শক্তি পারে।। কাল উপস্থিত হৈল কর্ম্মের লিখন। সে কারণে ক্ষত্র হাতে হইল মরণ।। আপনার মনে জানি ক্ষমা কর মনে। হীনকর্ম্মে হীনতাপী নহে কোনজনে।। শম তপ ক্ষমা এই ব্রাম্ভণের ধর্ম্ম। আমা সবে না রুচে তোমার ক্রোধকর্ম্ম।। পিতৃগণ-বচন শুনিয়া ঔর্ব্ব মুনি। কহেন কহিলা যত আমি সব জানি।। বিশেষ ক্ষত্রিয়গণ কৈল দুরাচার। দুষ্টে শাস্তি না করিলে মজিবে সংসার।। দুষ্টলোকে সমুচিত ফল যদি পায়। সংসারে তবেত লোক দুষ্টতা ছড়ায়।। অপ্রমিত কুকর্ম্ম করিল ক্ষত্রগণ। অল্পদোষে বিনাশিল অনেক ব্রাম্ভণ।। যখন ছিলাম আমি জননী-উদরে। ক্ষত্রভয়ে মম মাতা লইলেন উরে।। আর যত ব্রাম্ভণী পাইয়া গর্ভবতী। উদর চিরিয়া মারিলেক দুষ্টমতি।। অনাথের প্রায় করি মারিল সবারে। সে সব স্মরিয়া মম হৃদয় বিদরে।। হেন দুষ্টজনে যদি শান্তি না হইবে। এইমত দুষ্টাচার ত্যাগ কে করিবে।। শক্তি আছে শাস্তি নাহি দেয় যেইজন। কাপুরুষ বলি তারে সংসারে ঘোষণ।। এই হেতু ক্রোধ মম হইল অপার। নিবৃত্ত না হবে কোপ, না করি সংহার।। ঔর্ব্ব প্রতি পুনরাপি বলে পিতৃগণ। নিবৃত্ত করহ ক্রোধ শান্ত কর মন। ক্রোধতুল্য মহাপাপ নাহিক সংসারে। তপ জপ জ্ঞান সব ক্রোধেতে সংহারে।। বিশেষ যতির ক্রোধ চণ্ডাল গণন। এ সব গণিয়া বাপু কর সংবরণ।। আমা সবাকার বাক্য না কর লঙ্ঘন। আমরা তোমার হই পিতৃ গুরুজন।। নিবৃত্ত করিতে যদি নাহিক শকতি। উপায় কহি যে এক শুন মহামতি।। ত্রৈলোক্য জনের প্রাণ জলের ভিতরে। জল বিনা মুহুর্ত্তেকে না বাঁচে সংসারে।। এ কারণে জলমধ্যে এড় ক্রোধানল। জলেরে হিংসিলে হিংসা পাইবে সকল।। ঔর্ব্ব বলে না লঙ্ঘিব সবার বচন। সমুদ্রে থুইল ক্রোধ ভৃগুর নন্দন।। অদ্যপি মুনির ক্রোধ অনলের তেজে। দ্বাদশ যোজন নিত্য পোড়ে সিন্ধু মাঝে।। এত শুনি পরাশর ক্রোধে শান্ত হইল। রাক্ষসে মারিব বলি অগীকার কৈল।। রাক্ষস আমার তাতে করিল ভক্ষণ। পিতৃবৈরী নিশাচর করিব নিধন।। রাক্ষস বলিয়া না থুইব পৃথিবীতে। পরাশর মুনি এত দ্ররঢ় কৈল চিতে।। বশিষ্টের শক্তিতে না হইল বারণ। রাক্ষস-বধের যজ্ঞ কৈল আরম্ভণ।। পরাশর-যজ্ঞ-কথা অদ্ভুত কথন। সে যজ্ঞে হইল সব রাক্ষস-নিধন।।