পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারু ভুজলতা দেখিয়া মম্মথা,

        নিন্দে নিজ শরাসন।।
 প্রবাল শ্রীধর,      বিরাজে অধর,
        পূর্ব্বীয় অরুণ ভালে।
 নিন্দে কাদম্বিনী,     স্থির সৌদামিনী,
       সিন্দুর চাঁচর ভালে।।
 তড়িত মণ্ডল,       কর্ণেতে কুণ্ডল,
       হিমাংশু মণ্ডল আড়ে।
 দেখি কুচস্তম্ভ,       লজ্জায় দাড়িম্ব,
       হৃদিয় ফাটিয়া পড়ে।।
 কণ্ঠ দেখি কম্বু      প্রবেশিল অম্বু,
       অগাধ অম্বুধি মাঝে।
 নিন্দিত মৃণাল,      ভুজ দেখি ব্যাল
       প্রবেশিল বিলে লাজে।।
 মাজা দেখি ক্ষীণ,    প্রবেশে বিপিন,
       করি-অরি হরি লাজে।
 করে কোকোনদ,     পাইল বিপদ,
       নখরেতে দ্বিজরাজে।।
 কনক-কঙ্কণ,        করে ঝন্ ঝন্,
       চরণে নূপুর হ্ংস।
 জঘন সুন্দর,        বিহার কন্দর,
       স্বর্ণকাঞ্চী অবতংস।।
 রামরম্ভা তরু,       চারু যুগ্ম ঊরু,
       দেখি নিন্দে যত হাতী।
 উদর সুকৃশ,        মাজা মৃগ-ঈশ,
       নিতম্বযূগল ক্ষিতি।।
 নীল সুকোমল,       শরীর অমল,
       কমলে গঠিত অঙ্গ।
 ভারের কারণ,      হীন আভরণ,
       সহজে মোহে অনঙ্গ।।
 কমল-বদন,        কমল-নয়নে,
      কমলগঞ্জত গণ্ড।।
 দ্বি-কর কমল,      কমলাঙ্ঘ্রি তল,
      ভুজ কমলের দণ্ড।।
 মন্দ মন্দ যায়,      যোজনের 
 হইয়া উন্মত্ত,       ধায় চতুর্ভিত,
      কমল মধুপবৃন্দ।।
 কুরুকুল-ধ্বংসে,     কমলার অংশে,
       সৃজিত কমলজাত।
 কমলা-বিলাসী,      বন্দি কহে কাশী,
       কমলাকন্তের সুত।।
       ------
   রাজাদিগের লক্ষ্যভেদে উদ্যোগ।
   দ্রৌপদীর রূপ দেখি মোহে নৃপগণ।
 শীঘ্রগতি সকলে উঠিল ততক্ষণ।।
 হুড়াহুড়ি করি সাবে যায় বায়ুবেগে।
 সবে বলে রহ, লক্ষ্য আমি বিন্ধি আগে।।
 সুহৃদে সুহৃদে তব্র উপজিল দ্বন্দ্ব।
 ধনুক বেড়িয়া দাঁড়াইল নৃপবিন্দ।।
 তবে মগধের পতি জরাসন্ধ রাজা।
 রাজচক্রবর্তী ক্ষত্রকুল্র মহাতেজা।।
 ধনুক তুলিয়া সে ঝাঁকারে পুনঃ পুনঃ।
 নোয়াইয়া ধনুহুলে দিতে গেল গুণ।।
 অতিশয় বিপুল সে ধনুকের ভরে।
 মুর্চ্ছা হ'য়ে নৃপতি পড়িল কতদূরে।।
 তবে দুর্যোধন দম্ভ করিয়া বহুল।
 ধনু ধরি জানু পাতি নোঙাইল হুল।।
 মুখে রক্ত উঠিল কম্পিত কলেবর।
 কতদূরে মুর্চ্ছা হৈয়া ধুলায় ধুসর।।
 তবে মৎস-অধিপতি বিরাট রাজন।
 ঠেলাঠেলি করি ধনু নিল প্রাণপণ।।
 তুলিতে সে নারিল ছাড়িতে না পারিল।
 হাসিয়া সুশর্ম্মা রাজা কাড়িয়া লইল।।
 কন্যাকে দেখিয়া বুড়া খাইলি কি লাজ।
 লক্ষ্য বিন্ধিবার ছলে হাসালি সমাজ।।
 তুলিতে নাহিক শক্তি বিন্ধিবারে যাও।
 এই মুখে মৎসদেশে রাজভোগ খাও।।
 এত বলি শীঘ্রগতি তুলিলেক ধনু।
 দেখিয়া কীচক বীর ক্রোধে কাঁপে তনু।।