পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাণ লিঙ্গের ধান-- প্রমত্তং শক্তি সংযুক্তং বাণাখ্যঞ্চ মহাপ্রভং।

 মহেশ বলেন হরি পূর্ব্ব অবতারে।
 তোমার কনিষ্ঠ ভাই অদিতি উদরে।।
 কনিষ্ঠের ভাগ মাগিলেন নারায়ণ।।
 দেহ পুষ্পরাজ দ্বন্দ্ব হইক নিবারণ।।
 ইন্দ্র বলে তব বাক্য না করিব আন।
 আমার কনিষ্ঠ ভাই যদি ভগবান।।
 জ্যেষ্ঠে কনিষ্ঠেতে আছে ব্যবহার।
 তাহা না করিয়া কেন করে বলাৎকার।।
 না করিয়া মন্য মোরে ল'য়ে যাবে বলে।
 বলে নিল বলি ঘুষিবেক ভূমণ্ডলে।।
 শুনিয়া বলেন শিব গোবিন্দে চাহিয়া।
 ক্রোধ ত্যজ যদুনাথ আমারে দেখিয়া।।
 অজ্ঞানে হইয়া মত্ত দেব সুরপতি।
 সেই হেতু করে যুদ্ধ তোমার সংহতি।।
 আপনি ইন্দ্রত্ব তুমি দিয়াছ উহারে।
 বিবিধ বিপদে রাখিয়াছ বারে বারে।।
 আপন অর্জ্জিত যদি বিষবৃক্ষ হয়।
 কাটিতে আপন হস্তে সমুচিত নয়।।
 পারিজাত ফুল ল'য়ে যাহ বাধা নাই।
 মান্য করি লহ ইন্দ্রে হয় জ্যেষ্ঠভাই।।
 আমার বচন দেব করহ পালন।
 শিববাক্য স্বীকার করেন নারায়ণ।।
 গেলেন গোবিন্দে লৈয়া শিব ইন্দ্রস্থান।
 প্রণাম করিয়া হরি কনিষ্ঠ বিধানে।।
 তুষ্ট হৈয়া দেবরাজ কৃষ্ণে কোল দিয়া।
 পারিজাত বৃক্ষ দিল নিয়ম করিয়া।।
 যাবৎ থাকিবা তুমি অবনীমণ্ডলে।
 তাবৎ থাকিয়া পুষ্প আসিবেক কালে।।
 এত বলি দেবরাজ স্বর্গেতে চলিল।
 সত্যভামা চাহি তবে ইন্দ্রানী হাসিল।।
      ------
 গরুড় কর্ত্তৃক ইন্দ্রে লইয়া কৃষ্ণের নিকট
          গমন ও কৃষ্ণের ক্রোধ নিবারণ।
   শচীর দেখি হাসি সতীর অভিমান।
 গোবিন্দে চাহিয়া বলে কর অবধান।।
 প্রণাম করিলা তুমি ইন্দ্রের চরণে।
 হাসিয়া চাহিয়া মোরে দেখায় নয়নে।।
 যে প্রতিজ্ঞা কৈল শচী হইল সম্পূর্ণ।
 বলেছিলা গর্ব্ব আজি করিব সে চূর্ণ।।
 কি কারণে এমতে করিলা জগন্নাথ।
 না হয় নাহিক পেতে পুষ্প পারিজাত।।
 হাসিয়া বলেন প্রভু কমললোচন।
 এই হেতু সতী তব কেন দুঃখ মন।।
 যতেক দেখহ প্রাণী এ তিন ভুবনে।
 আমা হৈতে বিভিন্ন নাহি যে কোন জনে।।
 আপনাকে নমস্কার করি হে আপনে।
 তোমার ইহাতে লজ্জা হৈল কি কারণে।।
 সতী বলে তাহার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ কৈলা।
 আপন প্রতিজ্ঞা দেব বিস্মৃত হইলা।।
 সহস্রলোচনে দিব ধূলির অঞ্জন।
 ভাঙ্গিব ইন্দ্রের গর্ব্ব কহিলা তখন।।
 ক্ষত্রিয় প্রতিজ্ঞা না পালিলে ধর্ম্ম নহে।
 বিশেষ শচীর হাসি দেখি অঙ্গ দহে।।
 কৃষ্ণ কহে আমার প্রতিজ্ঞা নহে স্থির।
 ভক্তেরে বিক্রীত দেবী আমার শরীর।।
 না পারি শিবের বাক্য করিতে লঙ্ঘন।
 ইন্দ্র অপরাধ ক্ষমিলাম সে কারণ।।
 সতী বলে আমি প্রায় অভক্ত তোমার।
 সে কারণে ক্রোধে দহে শরীর আমার।।
 গোবিন্দ বলেন তুমি ত্যজ ক্রোধ মনে।
 এক্ষণে লোটাব ইন্দ্রে তোমার চরণে।।
 সত্যভামা আশ্বাসিয়া দৈবকী তনয়।
 ডাকিয়া বলেন শুন দেব মৃত্যুঞ্জয়।।
 তোমার বচন আমি লঙ্ঘিতে না পারি।
 তথির কারণে আমি ইন্দ্রে মান্য করি।।
 ইন্দ্রেতে আমাতে কিবা সন্মন্ধ নির্ণয়।
 কত অবতার মম ধরণীতে হয়।।
 হিরণ্যক্ষ হিরণ্যকশিপু দুই জন।
 প্রতাপেতে লয়েছিল সকল ভুবন।।
 মারিলাম তাহারে হইয়া অবতার।
 নিষ্কণ্টক স্বর্গেতে দিলাম অধিকার।।