পাতা:গৌড়ের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায়। @@ লিখিত আছে– রাজা শশাঙ্ক, গ্রহ-বৈগুণ্যহেতু ক্লেশপ্রাপ্ত হইয়া, তাহ শান্তির জন্ত সরস্তীরস্থ বালার্ক-সমাজ হইতে বিষ্ণু, সনাতন, স্বযজ্ঞ, শঙ্কর, দেবধর, সুধৰ্ম্ম, বাসুদেব, প্রজাপতি, চতুভূজ, লোকেশ, চক্ৰপাণি, ও মাধব—এই দ্বাদশজন শাকদ্বীপীয় ব্রাহ্মণকে গৌড়মগুলে আনয়ন করেন। এই শাকদ্বীপীয় ব্রাহ্মণগণকর্তৃক বঙ্গদেশে স্থৰ্য্যপূজার ও প্রতিমা-পূজার প্রবর্তন হয়। এ পর্যন্ত মহারাজাধিরাজ নরেন্দ্র গুপ্তের দুইখানি শাসুন আবিষ্কৃত হইয়াছে। একটা রোহিতাশ্বগড় বা রোটাসগড়ের পর্বত-গাত্রে খোদিত শিলালিপি, অপরটা মান্দ্রাজ প্রদেশে গঞ্জাম জেলায় প্রাপ্ত তাম্রশাসন । ইহা মহারাজাধিরাজ শশাঙ্কের সামস্ত মহারাজ সৈন্তাভীতের দান-বিষয়ক লিপি । উহা ৩০০ গুপ্তাব্দে অর্থাৎ ৬১৯ খৃষ্টাব্দে প্রদত্ত হয়। অতএব জানা যাইতেছে, ৬১৯ খৃষ্টাব্দেও শশাঙ্কের রাজ্য যায় নাই। হর্ষবৰ্দ্ধন ত্রয়োদশ বর্ষের চেষ্টাতেও শশাঙ্ককে দমন করিতে সমর্থ হন নাই। নরেন্দ্র গুপ্ত অত্যন্ত বৌদ্ধবিদ্বেষী ছিলেন । ইনি বুদ্ধগয়ায় বোধিক্রম নষ্ট করেন, ও আপনার এক মন্ত্রীকে বুদ্ধমূৰ্ত্তি দূরীভূত করিয়া মহাদেবমূৰ্ত্তি স্থাপনের আজ্ঞা দেন। মন্ত্রী কৌশলপূৰ্ব্বক রাজাদেশ ব্যৰ্থ করেন। হোয়েন সাং কর্ণসুবর্ণকে কী-লো—না—সু-ফা—লা—না বলিয়াছেন। যখন তিনি কর্ণসুবর্ণে আগমন করেন, তখন তথায়

  • এই শাকদ্বীপীয় ব্রাহ্মণগণ কর্তৃক পুণ্ড রাজ্যে সুৰ্য্য-পূজা বিশেষভাবে প্রচারিত হর । অধুন। অনুসন্ধানে নানাস্থান হইতে সুৰ্য্যমূৰ্ত্তি আবিষ্কৃত হইতেছে। মধাইপুরের কালীমন্দিরে একটা অক্ষত কুন্দর স্বৰ্য্যমূৰ্ত্তি পাওয়া গিয়াছে। পূৰ্ব্বে এই ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র স্বৰ্য্য-মন্দির ছিল । পুরাতন মালদহ নগরের অতি নিকটে এখন সুৰ্য্যপুরের কাঠাল নামক অরণ্য দৃষ্ট হয় ; পূর্বে সেখানে স্থাপুর নামক একটা নগৰু ছিল। এই স্বৰ্য্য পুরের বৈাগিভবন নামক স্থানে একটা মন্দিরের মধ্যে মাধাইপুরের মূৰ্ত্তি অপেক্ষাও বৃহৎ একটা সূৰ্য্যমূৰ্ত্তি রহিয়াছে। নানাস্থানে এখনও সূৰ্য্যনারায়ণের পুজ। হইতেছে ।