ভিতর হইতে বামাকণ্ঠে প্রশ্ন হইল “কে?” “আমি, দুয়ার খোল।”
পুনরায় বাঙ্গালায় প্রশ্ন হইল “তুমি কে?” “আমি ময়ূখ, ভয় নাই, দুয়ার খোল।”
এই বার দুয়ার খুলিল, ময়ূখ গৃহে প্রবেশ করিলেন। দ্বারের পার্শ্বে বিনোদিনী দাঁড়াইয়াছিল, সে জিজ্ঞাসা করিল, “বাবা, কি হইল?”
“দেওয়ান-ই-আমে গিয়াছিলাম, বাদশাহ্ দেওয়ান ই-খাসে যাইতে হুকুম করিয়াছেন, অদ্য সন্ধ্যাকালে যাইব।” “আমি গোবিন্দজীর পূজা তুলিয়া রাখিয়াছি। বাবা, বাদশাহ্ বেগমের বাঁদী আসিয়াছিল, আজি সন্ধ্যাকালে বৃন্দাবন হইতে বাঙ্গালী পুরোহিত আসিবেন। কালি অধিবাস, পরশু বিবাহ।”
ললিতা দ্বারের পার্শ্বে দাঁড়াইয়া দরবারের কথা শুনিতে ছিলেন, বিবাহের নাম শুনিয়া ছুটিয়া পলাইলেন। ময়ূখ হস্ত মুখ প্রক্ষালন করিয়া বসিলেন, তখন বিনোদিনী আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাবা, কি বুঝিতেছ?” ময়ূখ বলিলেন, “মা, অদৃষ্ট বোধ হয় ফিরিতেছে, এত দিন আসদ্খাঁর সন্ধান করিয়া মরিলাম, আজি দেখি আসদ্খাঁ দেওয়ান-ই-আমে উপস্থিত।”
“কালি দেওয়ান হরেকৃষ্ণ রায় আসিবেন।”
ময়ূখ গৃহে প্রবেশ করিলে, একজন দীর্ঘাকার কাল্মক্ তাতার ও অবগুণ্ঠনাবৃত এক মুসলমানী গৃহদ্বারে আসিয়া