“তাহাই হইবে, সে যদি অপরাধী হয় তথাপি তোমার নয়নাশ্রুর অনুরোধে তাহাকে মুক্ত করিব।”
বেগম আনন্দে আত্মহারা হইয়া বাদশাহের হস্তচুম্বন কুরিলেন, বাদশাহ্ হাসিয়া কহিলেন, “আলিয়া, অনেক দিন পরে ‘দিলের’ বলিয়া ডাকিয়াছ, আপনি বলিলে না, জহানপনা বলিলে না?” লজ্জায় আরজ মন্দ বাণুবেগমের মুখ রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল, তিনি বাদশাহের বক্ষে মুখ লুকাইয়া কহিলেন, “সকল সময়ে মনে থাকে না।”
“তবে বল কেন?”
“এখন যে তুমি বাদশাহ্ হইয়াছ, দিলের?”
“তখ্তে বসিয়া কি পর হইয়া গিয়াছি আলিয়া?” “তাহা কেন? চল তাহাদিগকে দেখিবে।”
নিকটে অন্য এক কক্ষে ময়ূখ, ভুবন ও দুইজন খোজা বসিয়াছিল। বাদশাহ্ কক্ষে প্রবেশ করিয়া ময়ূখকে দেখিয়া বলিয়া উঠিলেন, “মন্সবদার, তুমি এখানে?”
শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি ময়ূখকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিয়াছিল; তিনি ধীরে ধীরে উঠিয়া দাঁড়াইয়া অভিবাদন করিলেন এবং কহিলেন, “শাহান্শাহ, তক্দির।”
তখন বাদশাহ্ বেগমকে কহিলেন, “আলিয়া, এ আমার নূতন মনসবদার, ইহার পিতার ন্যায় বিশ্বাসী ভৃত্য জহাঙ্গীর বাদশাহের বোধ হয় আর ছিল না।