পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৩৮


—এ গাঁয়ে যে আবার,—আর এ গাঁয়েই কেন বলি, সব গাঁয়েই—এ ওর সঙ্গে খায় না, ও তার সঙ্গে কথা কয় না—একটা কাজকর্ম্ম পড়ে গেলে আর মানুষের দুর্ভাবনার অন্ত থাকে না। কাকে বাদ দিয়ে কাকে রাখা যায়, এর চেয়ে শক্ত কাজ আর গ্রামের মধ্যে নেই।” রমেশ বিশেষ আশ্চর্য্য হইল না। কারণ, এই কয়দিনের মধ্যেই সে অনেক জ্ঞানলাভ করিয়াছিল। তথাপি জিজ্ঞাসা করিল, “কেন, এ রকম হয়, জ্যাঠাইমা?” “সে অনেক কথা, বাবা। যদি থাকিস্‌ এখানে, আপনিই সব জান্‌তে পারবি। কারুর সত্যিকার দোষ-অপরাধ আছে, কারুর মিথ্যে অপবাদ আছে—তা’ ছাড়া মামলা—মকদ্দমা, মিথ্যে সাক্ষী দেওয়া নিয়েও মস্ত দলাদলি। আমি যদি তোর ওখানে দুদিন আগে যেতুম, রমেশ, তা হ’লে এত উদ্যোগ আয়োজন কিছুতে ক’রতে দিতুম না। কি যে সেদিন হবে, তাই কেবল আমি ভাবচি।” বলিয়া জ্যাঠাইমা একটা নিশ্বাস ফেলিলেন। সে নিশ্বাসে যে কি ছিল, তাহার ঠিক মর্ম্মটি রমেশ ধরিতে পারিল না, এবং কাহারো সত্যকার অপরাধই বা কি এবং কাহারও মিথ্যা অপবাদই বা কি হইতে পারে, তাহাও ঠাহর করিতে পারিল না। বরঞ্চ উত্তেজিত হইয়া কহিল,—“কিন্তু আমার সঙ্গে ত তার কোন যোগ নেই। আমি একরকম বিদেশী বল্‌লেই হয়—কারো সঙ্গে কোন শত্রুতা নেই। তাই আমি বলি জ্যাঠাইমা, আমি দলাদলির কোন বিচারই কর্‌ব না, সমস্ত ব্রাহ্মণ-শূদ্রই নিমন্ত্রণ করে আস্‌ব। কিন্তু,