পাতা:শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত.djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
পশ্চিমাভিমুখ দেবী দক্ষিণেতে ঢেঁকি ।

কৃষ্ণ বলে চিড়া আলে ঝোরে দুটি আখি ।।
হেন কালে রামকান্ত বৈরাগী আসিয়া ।
স্তন্যদুগ্ধ পান করে গালে হাত দিয়া ।।
পুত্রভাবে ঠাকুরাণী রাখিলেন কোলে ।
স্নেহাবেশে ভাসে দুটি নয়নের জলে ।।
বলে অদ্য পোহাইল কি সুখ যামিনী ।
প্রভাত আবেশ বুঝি ফলিল এখনি ।।
রামকান্ত বলে মাগো বলি যে তোমারে ।
বাসুদেব জন্মিবেন তোমার উদরে ।।
কিছুদিন পরে রামকান্ত আর দিনে ।
বাসুদেব কোলে করি বসিল যতনে ।।
বাসুদেব বলে যাব সফলা নগরে ।
পূজাদি লইব মাতা অন্নপূর্ণা ঘরে ।।
বাসুদেবে ল’য়ে সাধু পরম কুশলে ।
যশোমন্ত গৃহে আসি উপনীত হ’লে ।।
মূহূর্ত্তেক দিবা আছে সন্ধ্যার অগ্রেতে।
অন্নপূর্ণা ঝাড়ু দেন ঝাঁটা ল’য়ে হাতে ।।
ঠাকুরাণী ঝাঁট দেন পূর্ব্বাভিমুখেতে ।
রামকান্ত আসিলেন পূর্ব্ব দিক হ’তে ।।
সন্মুখে যাইয়া সাধু বলে যে মাতায় ।
কোলে কর বাসুরে সময় বয়ে যায় ।।
আস্তে ব্যস্তে ঠাকুরাণী বাসুদেবে ধরে ।
রাখিলেন পুত্র স্নেহে বাম কক্ষ পরে ।।
হইল অপূর্ব্ব শোভা দরশন করে ।
রামকান্ত নাচে চারিদিকে ঘুরে ফিরে ।।
সজল নয়ন সাধু প্রেমে পুলকিত ।
হাতে তালি দিয়া নেচে নেচে গায় গীত ।।
দেখরে নগরবাসী হ’ল কি আনন্দ ।
অন্নপূর্ণা অনায়াসে পাইল গোবিন্দ ।।
কিবা পূন্য করেছিল চৌধুরীর ঝি ।
সেই পূণ্যে পুত্র পেল বাসুদেব জী ।।
রামকান্ত কহে যশোমন্ত বৈরাগীরে ।
কিছুদিন বাসুদেবে রাখ তব ঘরে ।।
ওঢ়াকাঁদি মাচকাঁদি ঘৃতকাঁদি আদি ।
বহু গ্রামে ভ্রমিতেন কান্ত গুণনিধি ।।
দুই চারি দিন পরে অথবা সপ্তাহে ।
মাঝে মাঝে আসিতেন অন্নপূর্ণা গৃহে ।।
যে যে দিন না আসিত থাকিতেন দূরে ।
অন্নপূর্ণা পূজিতেন বাসুদেব জীরে ।।
তুলসী চন্দন মেখে নানা পুষ্প তুলে ।
দিত রাণী বাসুদেবে লহ লহ বলে ।।
এইরূপে পক্ষান্তর ভ্রমণ করিয়ে ।
দেশে গেল রামকান্ত বাসুদেবে ল’য়ে ।।
কিছুদিন পরে সেই অন্নপূর্ণা সতী ।
স্ত্রী আচারে যে দিন হইল শুদ্ধমতি ।।
শয়নে ছিলেন শ্রীযশোমন্ত বৈরাগী ।
অন্নপূর্ণা বসিলেন পদসেবা লাগি ।।
পদ সেবি প্রণমিয়া করি যোড়পাণি ।
পদ পার্শ্বে শয়ন করিলা ঠাকুরাণী ।।
যশোদা আবেশ বর দিলা রামকান্ত ।
বিরচিল তারক রসনা এ বৃত্তান্ত ।।
আদেশে গোলকচন্দ্র নরহরি কায় ।
পূর্ণ কর বাসনা রসনা গীত গায় ।।



শ্রীহরি ঠাকুরের জন্ম বিবরণ

এবে শুন ঠাকুরের জন্ম বিবরণ ।
যেই রূপে প্রভূ ভবে অবতীর্ণ হন ।।
পূর্ব্বেতে কড়ার ছিল ভক্তগণ সঙ্গে ।
উৎকলেতে দৈববানী ছিল যে প্রসঙ্গে ।।
আর এক বাক্য ছিল শূন্যবাণী সনে ।
শেষ লীলা করিব আমি ঐশান্য কোণে ।।
নীচ হয়ে করিব যে নীচের উদ্ধার ।
অতি নিন্মে না নামিলে কিসে অবতার ।।
কৃষ্ণ প্রেম সুনির্ম্মল উচ্চেতে না র’বে ।
নিম্ন খাদে থাকে বারি দেখ মনে ভেবে ।।
নীচ জন উচ্চ হ’বে বুদ্ধ তপস্যায় ।
বুদ্ধদেব অবতার যে সময় হয় ।।
বুদ্ধের কামনা তাহা পরিপূর্ণ জন্য ।
যশোমন্ত গৃহে হরি হৈল অবতীর্ণ ।।
বুদ্ধদেব বহুদিন তপস্যা করিল ।
তাতে ব্রহ্ম প্রণবাদি শূদ্রেতে পাইল ।।
নীচ জন প্রতি দয়া বুদ্ধদেব করে ।
প্রনবেতে অধিকারী শূদ্র তার পরে ।।
বুদ্ধদেব তপস্যাতে হইয়া সদয় ।
বরং গুরু বলে প্রভু বর দিতে চায় ।।
বুদ্ধ বলে বর যদি দিবে মহাশয় ।
অগ্রভাগে কর প্রভূ শূদ্রের উপায় ।।