পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
আনন্দ মঠ।

 মহেন্দ্র গীত শুনিয়া কিছু বিস্মিত হইল, কিছু বুঝিতে পারিল না—সুজলা সুফলা মলয়জশীতলা শস্যশ্যামলা মাতা কে,—জিজ্ঞাসা করিল, “মাতা কে?”

 উত্তর না করিয়া ভবানন্দ গায়িতে লাগিল।

“শুভ্র-জ্যোৎস্না-পুলকিত-যামিনীং—
ফুল্ল-কুসুমিত দ্রুমদলশোভিনীং
সুহাসিনীং সুমধুরভাষিণীং
সুখদাং বরদাং মাতরং।”

 মহেন্দ্র বলিল, “এ ত দেশ, এ ত মা নয়—”

 ভবানন্দ বলিল, “আমরা অন্য মা মানি না—জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী। আমরা বলি, জন্মভূমিই জননী, আমাদের মা নাই, বাপ নাই, ভাই নাই, বন্ধু নাই,—স্ত্রী নাই, পুত্র নাই, ঘর নাই, বাড়ী নাই, আমাদের কাছে কেবল সেই সুজলা, সুফলা, মলয়জশীতলা, শস্যশ্যামলা,—”

 তখন বুঝিয়া মহেন্দ্র বলিল, “তবে আবার গাও।”

 ভবানন্দ আবার গায়িল;—

“বন্দে মাতরং।
 সুজলাং, সুফলাং, মলয়জশীতলাং,
 শস্যশ্যামলাং, মাতরং।
 শুভ্র জ্যোৎস্না-পুলকিত-যামিনীং
 ফুল্লকুসুমিত-দ্রুমদল শোভিনীং,
 সুহাসিনীং সুমধুরভাষিণীং
 সুখদাং বরদাং মাতরং।
 সপ্তকোটী কণ্ঠ-কলকলনিনাদকরালে
 দ্বিসপ্তকোটী ভুজৈর্ধৃতখর করবালে