পাতা:কোর্‌-আন্‌ শরীফ-ভাই গিরিশ চন্দ্র সেন.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কোর-আন শরীফ

সূরা ফাতেহা [১]

প্রথম অধ্যায়

৭ আয়ত
( দাতা [২] দয়ালু ঈশ্বরের নামে প্রবৃত্ত হইতেছি । ১ । )

 বিশ্বপালক পরমেশ্বরেরই সম্যক প্রশংসা। ২।+ তিনি দাতা ও দয়ালু। ৩। + বিচারদিবসের অধিপতি। ৪। আমরা তোমাকেই মাত্র অর্চনা করিতেছি, এবং


  1. বিশেষ বিশেষ সময়ে ও বিশেষ বিশেষ ঘটনাসূত্রে কোর্-আনের এক এক সূরা (অধ্যায়) অবতীর্ণ হইয়াছে। ফাতেহা সূরার সম্বন্ধে এরূপ উল্লিখিত আছে যে, একদা মহাপুরুষ মোহম্মদ মক্কার প্রান্তরের পথ দিয়া যাইতেছিলেন, এমন সময়ে “হে মেহম্মদ,” এই শব্দ শুনিতে পাইলেন। তিনি উর্দ্ধে দৃষ্টি করিয়া দেখিলেন যে, গগনমার্গে স্বর্ণময় সিংহাসনের উপর একজন জ্যোতিষ্মান পুরুষ দণ্ডায়মান হইয়া তাঁহাকে আহ্বান করিতেছেন। মহাপুরুষ মোহম্মদ ইহা দেখিয়া ভয়ে পলায়ন করিতেছিলেন, কিন্তু পুনঃ পুনঃ তিনি “হে মোহম্মদ,” এই শব্দ শ্রবণ করিলেন। খাদিজাদেবীর পিতৃব্যপুত্র অরকা পুরাতন ধৰ্ম্মগ্রন্থ ও ইতিহাস শাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন, এবং বর্ত্তমান সময়ে আরব দেশে যে একজন স্বৰ্গীয় তত্ত্ববাহক সমুদিত হইবেন জানিতেন। তিনি এই ব্যাপার অবগত হইয়া হজরত মোহম্মদকে বলিলেন, “যখন তুমি এই শব্দ শ্ৰবণ করিবে পলায়ন করিও না, কি বলা হয়, মনোযোগপূৰ্ব্বক শুনিও”। হজরত তদনুসারে কর্ণপাত করিয়া শুনিতে লাগিলেন। তখন সেই জ্যোতিৰ্ম্ময় পুরুষের মুখে এই কথা শ্রবণ করিলেন, “হে মোহম্মদ, আমি জেব্রিল, তুমি এই দলের নবি" (স্বর্গীয় সংবাদদাতা)। তৎপর বলিলেন, “আমি সাক্ষ্য দান করিতেছি যে, ঈশ্বর ব্যতীত উপাস্য নাই, মোহম্মদ তাঁহার প্রেরিত ও তাঁহার দাস।” অপিচ বলিলেন, “বল, বিশ্বপালক পরমেশ্বরেরই সম্যক্ প্রশংসা” ইত্যাদি ফাতেহা সূরার শেষ বচন পর্য্যন্ত উচ্চারিত হইল।
    (তফ্‌সির ফায়দা।
  2. “রহমাণ” শব্দের অর্থ দাতা লিখিত হইল। কিন্তু "রহমাণ” শব্দের প্রকৃত অর্থ প্রলয়ান্তে চরমকালে পুনর্ব্বার মানবীয় অস্তিত্বের প্রদাতা। মোসলমানদিগের পারলৌকিক মত ও বিশ্বাস এই যে, মৃত্যুর পর আত্মা দেহের সঙ্গে কবরের ভিতরে বাস করে। ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারে এক সময় জগতের প্রলয় হইবে। তখন ভূগর্ভস্থ ভগ্ন ও বিচূর্ণ দেহ সকল পুনর্গঠিত ও সজীব হইয়া ঈশ্বরের