পাতা:গীতরত্ন গ্রন্থঃ (১৮৭০)- রামনিধি গুপ্ত.djvu/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ৸৹ ]

 বাবু শারীরিক নিদান এমত বুঝিতেন যে সময়ে স্নান সময়ে ভোজন, ও শয়ন করাতে একাল পর্য্যন্ত কখন কোন রোগ ভোগ করেন নাই, তিনি এত যে প্রাচীন হইয়াছিলেন তথাচ, চক্ষু, কর্ণ, প্রভূতি ইন্দ্রিয়ের কিছুমাত্র বৈলক্ষণ্য হয় নাই, এবং বুদ্ধির ভ্রমও হয় নাই, মৃত্যুর পূর্ব্বে কেবল এক বৎসর কাল দুর্ব্বলতা জন্য গতি শক্তির ব্যাঘাত হইয়াছিল, এ কারণ বাটীর বাহির হইয়া কুত্রাপি গমন করিতে পারেন নাই, এই এক বৎসরের মধ্যে যে যে মহাশয় দেখা করিতে অলিতেন তাহাঁবদিগেব সহিত হাস্য বদনে আলাপাদি করিয়া অবশিষ্ট্র সময়ে নানাবিধ বাঙ্গালা ও ইংরাজী পুস্তক পাঠ করিয়া সময় সম্বরণ করিতেন। এই মহাশয়ের মৃত্যুর ২০ কিম্বা ২৫ বৎসর পূর্বে অনেকেই কহিত “তিনি জীবিত নাই,, এই সুত্রে কত বাজি রাখা রাখী করিয়া হারজিত করিয়াছে।

 এমত বাৰ্দ্ধক্য সময়ে এক দিবস শ্রীযুক্ত রাজা বরদাকণ্ঠ রায় বাহাদুর বাবুর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া কহিলেন মহাশয় আমি একটি টপ্পার মোহাড়া রচনা করিয়াছি কিন্তু অনেক দিবস হইল ইহার অবশিষ্ট অংশ কিছুই হয় নাই ইহাতে বাবু কহিলেন ‘সে মোহাড়া কি তখন রাজাকৃত মোহাড়া পাঠ হইল যথা।

“মনেকরে করি পিরীতি না করি৷,,
বাবুবকৃত অবশিষ্ট অংশ৷
“সকল দুঃখের মূল প্রণয়ে চাতুরী৷
শ্যামাদরশনে যত ব্রজপুর নারী৷
জ্বলিত বিরহানলে দিবা বিভােবরী॥
বরদা বিধান এই বুঝহ বিচারি৷
প্রেমসুখ যত দুঃখ হরি২ হরি॥ ১ ॥ ,,

 রাজা ইহা শ্রবণে পরম সন্তুষ্ট হইয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন।