এই ইংরাজ-দুর্গটি সমচতুষ্কোণ না হইলেও দেখিতে প্রায় চতুষ্কোণ বলিয়াই বোধ হইত। চারি দিকে দৃঢ়োন্নত দুর্গ প্রাচীর, প্রাচীর-সংলগ্ন চারিটি সুদৃঢ় বুরুজ, প্রত্যেক বুরুজে দশটি করিয়া কামান পাতা; নদীর দিকে প্রাচীরের উপর দিয়া সারি সারি বাইশটি কামান, এবং সিংহদ্বারের উভয় পার্শ্বে দুইটি বৃহদায়তন আগ্নেয়াস্ত্র নিরন্তর বদনব্যাদান করিয়া বৃটিশ-বণিকের সমর-কৌশলের পরিচয় প্রদান করিত।“সেলামীর তোপ” বলিয়া ইংরাজেরা আরো অনেকগুলি তোপ আনাইয়া দুর্গমধ্যে সাজাইয়া রাখিয়াছিলেন; যুদ্ধকলহ উপস্থিত হইলে, তাহাতেও গোল- বর্ষণ করিবার সুবিধা হইতে পারিত। এই সকল কারণে কাশিমবাজারের ইংরাজদুর্গ সহসা হস্তগত করিবার সম্ভাবনা ছিল না।[১]
এই ক্ষুদ্রকায় ইংরাজদুর্গে উইলিয়ম ওয়াটস, কলেট, ব্যাটসন, সাই- কস, এইচ ওয়াটস, চেম্বার্স, ওয়ারেণ হেষ্টিংস প্রভৃতি ইংরাজ কর্ম্ম- চারিগণ বাস করিয়া কোম্পানী বাহাদুরের বাণিজ্য ব্যবসায়ের ভিত্তি মূল রক্ষা করিতেন;—দুর্গরক্ষার জন্য লেফটেনাণ্ট ইলিয়টের অধীনে কতকগুলি গোলন্দাজ সেনা দুর্গমধ্যে পদচারণ করিয়া বেড়াইত।[২]
একজন ইংরাজ ইতিহাসলেখক বলিয়া গিয়াছেন যে, সিরাজদ্দৌলা কাশিমবাজার অবরোধ করিতে না করিতেই ইংরাজেরা নির্ব্বিবাদে দুর্গত্যাগ করিয়া নবাবের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়াছিলেন।[৩]