পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰথম পরিচ্ছেদ তৎকালে এই অঞ্চলে আধ্যাত্মিক বিদ্যার সমধিক চৰ্চা হইত । সেখানকার বহু বিচক্ষণ ব্যক্তি রত্ন-লাভাশায় সেই সুগভীর সাধন-সমুদ্রে নিমগ্ন হইয়াছিলেন । মনসুরও আসিয়া তাহাতে বাপ দিয়া পড়িলেন । তখন তাহার অবিরাম সাধু-সংসৰ্গ ও তত্ত্বজ্ঞানালোচনা চলিতে লাগিল । কিন্তু তাশচৰ্য্যের বিষয়, এই সুখ-সন্মিলনেও তিনি তৃপ্তি পাইলেন না। ; তাহার হৃদয়ের তাকাজক্ষা —ধৰ্ম্মপিপাসা উপশমিত হইল না । ঔদাসীন্যের কি যেন এক গাঢ় কুহেলিকা—“তত্ত্বানুসন্ধানের কি এক দৃঢ় অ্যাবরণ তাহার হৃদয়-ভূমি অাচচ্ছন্ন করিয়া রহিল। তদীয় অনন্যদুস্কর অধ্যবসায়-প্ৰসূত যশসেীরভে সকলে বিমুগ্ধ ও বিস্মিত হইল বটে, তিনি সাধারণ্যে সমাদৃত ও প্রিয়পাত্ৰৰূপে পরিগৃহীত হইলেন বটে, কিন্তু তাহার সেই ঔদাসীন্য-মেঘজাল অন্তরাকাশ হইতে অপসারিত হইল না, প্ৰবল ধৰ্ম্ম-পিপাসার শান্তি হইল না, আন্তরিক বাসনা চরিতাৰ্থ হইল না । তখন তিনি এক জন উপযুক্ত দীক্ষাগুরুর আবশ্যকতা অনুভব করিলেন । শাস্ত্ৰানুমোদিত ক্ৰিয়াকলাপ যথারীতি বিশুদ্ধভাবে সম্পন্ন করেন, আর কোথা গেলে কিরাপে অভিলষণীয় দীক্ষাগুর পাইবেন, এই চিন্তাতেই দিন-যামিনী ম্ৰিয়মাণাভাবে ক্ষেপণ করেন । ভাবনার ভয়ানক কালিমা-রেখা তাহার বিস্তৃত ললাট-ফলকে নিয়ত পরিদৃশ্যমান থাকিত, সৰ্ব্বদাই অধোভাগে দৃষ্টি সংযোগ করিয়া কুঞ্চিতনেত্ৰে কি ভাবিতেন এবং স্বেচ্ছামত স্থানে স্থানে ধৰ্ম্মমন্দিরে গমনাগমন পূৰ্ব্বক আপন উদ্দেশ্য-সিদ্ধির চেষ্টায় ফিরিতেন ।