পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৰ্ষি মনসুর ৬০ তখন কারাধ্যক্ষ কহিলেন , “তবে আপনি আর এস্থলে বসিয়া নিরর্থক কষ্টভোগ করিতেছেন কেন ? আপনি তো সৰ্ব্বাগ্ৰেই এই কুস্থান হইতে প্ৰস্থান করিতে পারিতেন ? আমি বিনীত ভাবে প্ৰাৰ্থনা করিতেছি, আপনিও স্বভবনে প্ৰত্যাগমন করুন । নিয়তি-লিপি খণ্ডনীয় নহে, আমার অদৃষ্ট যাহা আছে, তাহাই ঘটিবে। রাজপুরুষগণ এই অত্যভূত ঘটনার কারণজিজ্ঞাসু হইলে—আমার উপর উৎপীড়ন হইলে আমি যদৃচ্ছা উত্তর প্রদান করিব ।” কারাধ্যক্ষের কাতরোক্তি শ্ৰবণে মহৰ্ষি কহিলেন, “কারা বাসিগণ খলিফার বন্দী, অল্প দোষী, তাই তাহারা মুক্তি লাভ করিয়াছে । আর আমি আল্লার বন্দী—ভীষণ অপরাধী, অামার মুক্তি নাই । আমি কোথায় যাইব ? যে ব্যক্তি আল্লার কোপ দৃষ্টিতে পড়িয়াছে, ইহজগতে তাহার কি পলাইবার স্থান আছে ? অথবা পলাইলেও কি তাহার রক্ষা হইতে পারে ? আমার দেহ তরী বিস্তীৰ্ণ জলধি-বক্ষ-ভাসমান অসহায় তৃণখণ্ডের ন্যায় অনন্ত পাথারে ভাসাইয়া দিয়াছি। অনন্ত অপার অসীম বারিাশি আমার চতুদিকে বিশাল মরস্থলীর ন্যায় ধূ-ধূ ধূ-ধূ করিতেছে, উত্তাল তরঙ্গাঘাতে নিমেষে শতবার নিমজিত এবং শতবার উথিত হইতেছি ; আমার সৈকতভূমি-সংলগ্ন হইবার আশা সুদূর-পরাহত । আমি দিশাহারা হইয়া কুল-কিনারা খুজিয়া পাইতেছি না । সুতরাং এখান হইতে যাইব কোথায় ? যাইতে অামার প্রবৃত্তি নাই । রাজদণ্ডে আর ভয় করিয়া কি করিব ?