পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
তরুণের স্বপ্ন

নির্ব্বাসিত করিয়াও সরকার সন্তুষ্ট হইতে পারেন না, অথবা সমস্ত ব্যাপারটাই একটা বিরাট ধাপ্পাবাজি? যদি প্রথম কথা সত্য হয়, তাহা হইলে ব্যুরোক্রেশীর নিকট সেরূপ ভয়ের কারণ হওয়া আমার পক্ষে শ্লাঘার কথা। কিন্তু পরক্ষণেই যখন আমি আমার নিজ জীবন ও কার্য্যাবলীর কথা মনে মনে চিন্তা করি, তখন বুঝিতে পারি যে, একদল স্বার্থান্ধ হিংসাপরায়ণ লোক আমাকে যে ভাবে দেখিতেছেন আমি প্রকৃতই সেইরূপ নাহি। আমি বাঙ্গলার বাহিরে কোন রাজনীতিক কার্য্য করি নাই এবং ভবিষ্যতে করিব বলিয়াও মনে করি না, কারণ বাঙ্গলাকেই আমি আমার কার্য্যক্ষেত্র ও আদর্শের পক্ষে বিরাট বলিয়া মনে করি। বাঙ্গলা সরকার ছাড়া অন্য কোন সরকারের আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আছে বলিয়া আমার মনে হয় না। ছয় বৎসরের মধ্যে আমি কংগ্রেসে যোগদান ও পারিবারিক কারণ ব্যতীত অন্য কোনও কার্য্যে বাঙ্গলার বাহিরে যাই নাই। তবে কেন আমাকে সমস্ত ভারত, ব্রহ্মদেশে ও সিংহলে প্রবেশ করিতে নিষেধ করা হইতেছে? সিংহল ত খাস বৃটিশ উপনিবেশ, ভারত-সরকারের নিষেধ-আজ্ঞা আইনানুসারে তথায় খাটিবে কি না সন্দেহ।

বাঙ্গলা-সরকার এখন আমার গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত করিতে চাহেন। আমি যখন স্বাধীন ছিলাম, তখনই বা আমার কি গতিবিধি ছিল? ১৯২৩ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর হইতে ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর পর্য্যন্ত এক বৎসরের মধ্যে আমি মাত্র দুইবার কলিকাতার বাহিরে গিয়াছিলাম। প্রথম খুলনা জিলা-কন্‌ফারেন্সে যোগদান করিবার জন্য এবং দ্বিতীয় নদীয়া জিলার কাউন্সিল নির্ব্বাচনে একজন সভ্যপদপ্রার্থীর পক্ষে বক্তৃতা করিবার জন্য। ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারী হইতে অক্টোবরের মধ্যে আমি একবারও