পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিবরণী আটক করিয়া রাখা হইতেছে। পুলিসের কর্ত্তাদের যুক্তি বড় অদ্ভুত। রেঙ্গুনের পত্রিকাগুলিতে দেখিলাম যে, আমার ছুটি আরও ৩ মাস বর্দ্ধিত করা হইয়াছে।

 *  *  *

 যে সব ভাউচার, রসিদ ইত্যাদির কথা উল্লেখ করিয়াছেন, অনুগ্রহ করিয়া উহা রাখিয়া দিতে ভুলিবেন না। কেননা কারামুক্তির পর আমি এ বিষয়ে লড়িতে চাই। চরম দুঃসময়েরও একটা শেষ আছে; অতএব লড়িতে একদিন পারিবই। ইহা আমার বিশ্বাস যে, আমি ভাতা পাইবার অধিকারী এবং এ ব্যাপারে আমার যুক্তিও দুর্ব্বল নয়।

 আপনি জানিতে চাহিয়াছেন যে, Regulation III-র পরিবর্ত্তে অর্ডিন্যান্স জারীর ফলে এখানে আমার প্রতি অন্য কোনও রকম ব্যবহার করা হইতেছে কিনা। এ প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি অসমর্থ কারণ আমি অনুভব করিতে পারিতেছি যে, দুঃস্বপ্নটা আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সঞ্চালিত হইয়া আঙ্গুলগুলিকে পর্য্যন্ত অবশ করিয়া ফেলিতেছে। দৈহিক কষ্ট, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তরও ঐ একই কারণে আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। জানি না পুলিসের সেন্সর আমাকে একথা বলিতে দিবেন কিনা যে, এখানে আমাদের বইপত্র কিছু দেওয়া হয় না এবং মানসিক ক্ষুধা নিবৃত্তির কোনও উপায়ও আমাদের নাই। গভর্ণমেণ্টের নিকট হইতে এ পর্য্যন্ত একখানি বইও আমি পাই নাই। বন্দীদের প্রতি যেরূপ ব্যবহার করা হইয়া থাকে উহা তাহাদের মর্য্যাদার অনুরূপই বটে!

 অনুগ্রহ করিয়া রামিয়াকে বলিবেন যে কর্পোরেশনের ছুটি, পেন্সন ও প্রভিডেণ্ট ফাণ্ড সংক্রান্ত নিয়মাবলী যেন তিনি আমাকে পাঠান। বিদ্যাধরী সমস্যার বিষয়ে জ্ঞান লাভ করিবার জন্য কর্পোরেশনের অফিসের জন্য আমি দুই তিনখানা বই কিনিয়াছিলাম।

১২৫