পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৪৭-৫৬ ] মজিলপুরে ইংরাজী স্কুল প্রতিষ্ঠা ও ব্রাহ্মধর্ম্মের প্রবেশ ২৯ মত ছিল, সেগুলি আমার বড় ভাল লাগিত ; দুই এক বার পড়িলেই মুখস্থ হইয়া যাইত। ইহাতে বর্ণপরিচয়ের ব্যাঘাত হইত বটে, কিন্তু আমি বর্ণ মিলাইয়া মুখে মুখে কবিতা করিতে পারিতাম। মজিলপুরে ইংরাজী স্কুল প্রতিষ্ঠা ও ব্রাহ্মধর্ম্মের প্রবেশ - হার্ডিঞ্জ বাঙ্গলা স্কুল স্থাপনের পরেই আমাদের গ্রামে এক ইংরাজী স্কুল স্থাপিত হইয়াছিল। হরিদাস দত্ত নামে জমিদার বাবুদের বাড়ীর এক জন যুবক তখন দেশে শিক্ষাবিস্তার বিষয়ে বড়ই উৎসাহী ছিলেন। ইনি অল্প দিন হইল পরলোকগত হইয়াছেন। অনুমান করি, প্রধানতঃ ইহার ও ইহার বয়স্তাদিগের যত্নে ও জমিদার বাবুদের সাহায্যে ঐ ইংরাজী বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। আমার মনে আছে যে সেই স্কুলে এক জন ইংরাজ হেড মাষ্টার লওয়া হইয়াছিল। সেটা গ্রামবাসীদের পক্ষে এক নূতন ব্যাপার। সাহেবের সঙ্গে এক কুকুর স্কুলে আসিত, সে সাহেবের টেবিলের তলায় শুইয়া থাকিত। আমরা তাহাকে দেখিয়া বড় ভয় পাইতাম। সাহেব জমিদার বাবুদের এক বাগান-বাড়ীতে থাকিতেন। আমরা তঁর পালিত মুরগী ও অন্যান্য পাখী দেখিবার জন্য গিয়া সেই বাগানে উকি ঝুকি মারিতাম। সাহেবকে রাস্তায় দেখিলে সে পথ হইতে অন্তধান করিতাম। ইহাতেই প্রমাণ, আমাদের গ্রামে নূতন সভ্যতার আলোক আমার বাল্যদশাতেই প্রবেশ করিয়াছিল। কেবল তাহা নহে; হরিদাস দত্ত প্রভৃতি কয়েক জন যুবকের উৎসাহে “মজিলপুর পত্রিক’ নামে একখানি পত্রিকা বাহির হইয়াছিল, এবং কিছু দিন চলিয়াছিল। তদ্ভিন্ন ব্রজনাথ দত্ত নামে আমাদের গ্রামে এক জন মধ্যাবস্থা বিষয়ী লোক ছিলেন। জ্ঞানচৰ্চাতে র্তাহার বিশেষ উৎসাহ ছিল। তিনি ব্রাহ্মণ পণ্ডিত ও জ্ঞানী মানুষদিগকে লইয়া সর্ব্বদা জ্ঞানালোচনা করিতে ভালবাসিতেন। শুনিয়াছি, তিনি ব্রাহ্মসমাজের তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা লইতেন। ইহার জ্যেষ্ঠ পুত্র শিবকৃষ্ণ দত্ত মজিলপুর পত্রিকার