পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‚ቅb” শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘আত্মচারিত পরিঃ আমাকে~<শায়াইয় তাহার কানে চীৎকার করিয়া বলিলেন, “আমার দুধ শুকিয়ে গিয়েছে, তোমার বাবা না খেতে পেয়ে মরে।” এই কথা শুনিয়া তিনি নিজের গালে মুখে চড়াইতে লাগিলেন, এবং এই সংবাদ তঁাকে কেহ দেয় নাই বলিয়া আমার পিস মহাশয় ও পিসীমাকে গালাগালি দিতে লাগিলেন ; এবং পিসা মহাশয় আসিলে হুকুম দিলেন, “আমার বাবার জন্য যত দুধ লাগে রোজ ক’রে দাও।” আমার জন্য দুধের রোজ হইল। তদবধি প্রপিতামহ কিছু সতর্ক হইয়া কান পাতিয়া থাকিতেন। ছোট ছেলের কান্না একটু কানে গেলেই “বাবা কেন কঁাদে” বলিয়া চীৎকার করিতেন, আর বড় পিসী রাগিয়া যাইতেন। শৈশবে স্বাস্থ্য ভঙ্গ।—আমার জন্য দুধের রোজ হইল বটে, কিন্তু তখন উদর ভাঙ্গিয়াছে, ছেলে আর বঁাচান যায় না । আমার শরীর অস্থিচর্ম্মসার হইল। তখনকার অবস্থা এই বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে, আমার পাছ ছিল না যে পাছ পাতিয়া বসি ; যখন বসিতে শিখিলাম, তখন পিঠের দাড়ার উপর বসিতাম। সেই যে আমার হাত পা ছিনা পড়িয়া গেল, সেই ছিনা-পড়া এখনও রহিয়াছে। দারুণ উদারভঙ্গের উপরে রসিতাড়কা রোগ দেখা দিল। মধ্যে মধ্যে সমুদয় গা গরম হইয়া হাত পা খেচিতাম ও অজ্ঞান হইয়া যাইতাম । মা আমাকে বুকে ধরিয়া ছেলে গেল’ বলিয়া চীৎকার করিয়া কঁাদিতেন। মায়ের মুখে শুনিয়াছি, এই রোগ প্রায় ৭৮ বৎসর বয়স পর্য্যন্ত ছিল, ডুব দিয়া নাইতে শিখিলে সারিয়া যায়। আমার আকার ও মূর্ত্তি তখন এ প্রকার হইয়াছিল যে, আমাকে রাখা ও আমার সেবা করা একমাত্র জননী ভিন্ন আর কাহারও সাধ্য ছিল না। পিসীমার স্বতন্ত্র বাটীতে গমন।-যাহা হউক, আমার পিসীমা আমার প্রপিতামহের তিরস্কার খাইয়া খাইয়া বুঝিতে পারিলেন যে আমাদের ভিটাতে আর তঁহার থাকা হইতেছে না । পিসা মহাশয় আমাদের বাড়ীর