পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অলঙ্কারের বাক্সটি সঙ্গে লয়। কিন্তু আবশ্যক হইলে পরে তাহাও পথে ফেলিয়া চলিয়া যায়। তেমনি আমি তোমার জন্য সকলকে ছাড়িয়াও সংসারের সম্পবেল বলিয়া যে চাকুরিটি ধরিয়া আছি, হে ভগবান, আবশ্যক হইলে সেটিও ছাড়াইয়া আমাকে লাইয়া যাও।” এই প্রার্থনার পর আমার মনে এক অদ্ভুত পরিবতন ঘটিল, সংসারের জন্য ভয় ভাবনা যেন কোথায় চলিয়া গেল। অন্তর হইতে “চাকুরি, ছাড়া, ছাড়,” এই বাণী আমাকে অস্থির করিয়া তুলিতে লাগিল। বন্ধগণের অনেকে নিষেধ করিতে লাগিলেন, কিন্তু আমি আর বিলম্ব করিতে পারি না! একটা দিন যায়, যেন এক বৎসর যায়! মাচের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করিলে হেয়ার স্কুলের নিয়মানসারে সে বৎসরের বোনাস সাবরােপ স্কুল ফন্ড হইতে দইশত কি তিনশত টাকা পাইতে পারিতাম। শিক্ষক বন্ধগণ। সেজন্য বার-বার অপেক্ষা করিতে বলিতে লাগিলেন, কিন্তু অন্তরের বাণী অপেক্ষা করিতে দিল না। ১৫ই ফেব্রুয়ারি শিক্ষাবিভাগের ডিরেক্টরের হসেত পদত্যাগ পত্র দিয়া নিঃশবাস ফেলিয়া বাঁচিলাম। ১লা মাচা হইতে সবাধীন হইয়া এই আন্দোলনে ডুবিলাম। আমার পদত্যাগ-পত্র পাইয়া প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রিন্সিপাল সাহেব ও ডিরেক্টর সাহেব আমাকে ডাকাইয়া সে পত্র ফিরাইয়া লইবার জন্য অনেক বলিলেন, কিন্তু আমি কোনো অনরোধ রক্ষা করিতে পারিলাম না। বন্ধরা যদি জিজ্ঞাসা করিতেন, “কিরাপে চলবে ?” আমি বলিতাম, “কিছই জানি না। আর থাকতে পারছি না।” তদবধি ঈশবর আমার ভার সমচিতরাপে বহন করিয়া আসিতেছেন। আমি তাঁহার করণার কথা আর কি বলিব! তিনি যে কিরাপে আমার সকল অভাব পরিণ করিয়া আসিয়াছেন, তাহা ভাবিলে আশচযান্বিত হইতে হয়। যে সকল অভাব আমার কলপনারও অতীত ছিল, তাহাও তিনি পরিণ করিবার উপায় করিয়া রাখিয়াছিলেন। ধন্য তাঁহার কৃপা! প্রগতিশীল ব্রাহামদলের পত্রিকা। এদিকে আমরা আন্দোলন চালাইবার জন্য ১৭ই ফেব্রুয়ারি হইতে ‘সমালোচক’ নামে এক বাংলা সাপত্তাহিক কাগজ, ও ২১শে মার্চ হইতে ‘ব্রাহ পাবলিক ও পিনিয়ন’ নামক এক ইংরাজি সাপত্তাহিক কাগজ বাহির করিলাম। দােগামোহনবাব ও আনন্দমোহনবাব উক্ত উভয় কাগজের ব্যয়ভার বহন করিতে প্রবত্ত হইলেন। দরগামোহনবাবরে কনিষ্ঠ ভ্রাতা ভুবনমোহন দাস মহাশয় ইংরাজি কাগজের এবং আমি বাংলা কাগজের সম্পাদক হইলাম। তাহাতে চারিদিকের ব্রাহমগণের মতামত প্রকাশিত হইতে লাগিল । ব্রাহাম সমাজ কমিটি। এই সকল মতামত ও সংবাদ প্রচার হওয়ায় কলিকাতাতে ও অপরাপর সর্থানে ব্রাহমাদিগের মধ্যে ঘোর আন্দোলন পাকিয়া দাঁড়াইল। আমরা গভীর চিন্তার মধ্যে পড়িয়া গেলাম। আমাদের বন্ধ গোষ্ঠীতে এই পরামর্শ স্থির হইল যে, এই মহা বাত্যার মধ্যে কান্ডারীর কাজ করিবার জন্য সমাজের বিশিস্ট কতিপয় ব্যক্তিকে লাইয়া ‘ব্রাহামসমাজ কমিটি” নামে একটি কমিটি নিয়োগ করা ভালো। তাঁহারা লোকের ভাব অবগত হইবেন, তাঁহারা কতব্য নিধারণ করবেন, তাঁহারা আন্দোলনকে চালাইবেন। এই কমিটি নিয়োগের মানসে আমরা মিটিং করিবার জন্য কেশববাবর নিকট ২৩শে ফেব্রুয়ারি এলবাট হল চাহিলাম, কারণ তিনি উহার সম্পাদক ছিলেন। তিনি অনািমতি দিলেন, কিন্তু আমরা মিটিং করতে গিয়া দেখি যে গ্যাস জৰালিবার S8