পাতা:আত্মচরিত (৪র্থ সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88V শিবনাথ শান্ত্রীর আত্মচাবিত * [ ২২শ পরিঃ তাহার আহারাদির নিয়ম স্বতন্ত্র ছিল, তাহা আমাদের ভবনের নারীগণ জানিতেন না ; নবীন বাবুও স্বাভাবিক হীশীলতাবশতঃ জিজ্ঞাসা করিলেও কিছু বলিতেন না। এতদ্ভিন্ন বোধ হয় তাহার অপর কোনও উদ্বেগের কারণও ছিল। যাহা হউক, তিনি আমার ভবনে গুরুতর রক্তামাশয় রোগে আক্রান্ত হইয়া পড়েন। তখন খাণ্ডোয়া হইতে র্তাহার পরিজনদিগকে আনা হয় এবং তঁহার ইচ্ছানুসারে তাহাকে নবনির্ম্মিত ভবনে স্থানান্তরিত করিয়া চিকিৎসা করা যায়। এই রোগশয্যাতে সেই সাধু পুরুষের যে ভাব দেখিয়াছিলাম, তাহা চিরদিন মনে মুদ্রিত রহিয়াছে। যখন তিনি বুঝিতে পারিলেন যে এ যাত্রা আর বঁাচিবেন না, তখন প্রথম প্রথম দেখা গেল যে তঁহার পত্নী নিকটে গিয়া বসিলেই তাহার। মন আবেগে পূর্ণ হইয় উঠে ও চক্ষে জলধারা পড়েী বোধ হয় ভাবেন, তাহার মৃত্যুর পর তাহার পত্নীকে কে দেখিবো। দুই তিন দিন পরে সে ভাব চলিয়া গেল, চিত্ত ও মুখ প্রশান্তভােব ধারণ করিল। তখন পত্নী নিকটে গিয়া কঁদিলে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া আমার দিকে দেখাইয়া দিতেন, এবং আর সংসারের কথা শুনাইতে বারণ করিতেন । এই অবস্থায় একদিন একজন ব্রাহ্ম যুবক আসিয়া বলিলেন, “আপনাকে একটী গান শুনাইতে চাই ; কোন গানটী করিব ?” নবীনচন্দ্র বলিছলন, “ঐ যেদেখা যায় আনন্দ ধাম” এই গানটী করুন। সে গানটি এই-- “ঐ যে দেখা যায় আনন্দ ধাম, অপূর্ব্ব শোভন, ভবজলধির পারে, জ্যোতির্ম্ময় ! শোকতাপিত জন সবে চল, সকল দুখ হবে মোচন ; শান্তি পাইবে হৃদয় মাঝে, প্রেম জাগিবে অন্তরে। কত যোগীন্দ্র ঋষিমুনিগণ না জানি কি ধ্যানে মগন । স্তিমিত লোচন কি অমৃতব্লসপানে ভুলিল চরাচর।