পাতা:আত্মচরিত (৪র্থ সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vg শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচাবিত Yes Pife কলিকাতা হইতে সমাগত বাবুদের জিনিসপত্র যোগাইতে বারণ করিয়াছেন । পুণ্যদাপ্রসাদ নিজে দরিদ্র, তথাপি তিনি আমাদিগের প্রয়োজনীয় যাহা কিছু যোগাইতেন ; কিন্তু তঁহার বাড়ীর লোক বিরূপ, এবং দোকানীরা তঁহাকেও কিছু দিবে না। শুনিয়া আমার বড় হাসি পাইল। বলিলাম,-“এস, উপাসনা ত করি, তার পর দেখা যাক কি দাডায়।” এই বলিয়া স্নানান্তে আমরা উপাসনাতে বসিলাম। উপাসনান্তে উঠিয়া দেখি যে, পাশের ঘরেতে কে আমাদের জন্য জলখাবাব ও বাধিবাব জন্য চাউল, ডাল, তবকারি প্রভৃতি ও ভোজনপত্রেব জন্য বড বন্ড পদ্মপাত রাখিয়া গিয়াছে । দেখিয়া ত আমাদের বড় আশ্চর্য্য বোধ হইল। উত্তমরূপে জলযোগ করিলাম। আমাদেব একজন সেই পাশেব ঘবেই উনুন কাটিয়া রন্ধনে প্রবৃত্ত হইলেন। যথাসময়ে উত্তম আহার কবা গেল । বৈকালে আমরা ধর্ম্মালোচনাতে নিযুক্ত আছি, এমন সময় কে আসিয়া সেই পাশের ঘরে আমাদের বৈকালে খাইবার সমুদয় আয়োজন রাখিয়া গিয়াছে। পুণ্যাদাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, কে এইরূপে প্রয়োজনীয় বস্তু যোগাইতেছে। তিনি কিছু সন্ধান বলিতে পারিলেন না। পরদিনও এইরূপ চলিল। আমরা ব্রহ্মোৎসব করিলাম ; উপাসনা, পাঠ, ধর্ম্মালোচনাদি সকলি চলিল ; কিন্তু গ্রামের এক প্রাণী একবার উকি মারিল না। তৃতীয় দিবস প্রাতে আমি বলিলাম, “গ্রামের এক প্রাণী ত এল না, চল আজ নগবকীর্ত্তনে বাহির হই।” আমরা ৭টার সময় নগবকীর্ত্তনে বাহির হইলাম ; দেখি, মধ্যরাত্রে গ্রাম যেমন নিস্তািন্ধ থাকে, তেমনি নিস্তব্ধ। যে পথ দিয়া যাই, সে পথের সকল বাড়ীর দ্বার বন্ধ, জনমানবের দেখা নাই। আমি বলিলাম, “আচ্ছা! করিয়া কীর্ত্তন করত, লোকে ঘরের দ্বার বন্ধ করিয়া আছে তাই থােক, ঈশ্বরের দয়ার কথা কানো ঢালিয়া দাও।” খুব উৎসাহে কীর্ত্তন চলিল ॥৮