পাতা:আত্মচরিত (শিবনাথ শাস্ত্রী).pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম পরিচ্ছেদ VO শেয়ালখাকীকে আমাদেরই একজন ভাবিতাম। সে সকল খেলাতেই সঙ্গে থাকিত। আমরা পাড়ার বালক বালিকাদের সঙ্গে মিশিয়া কখন কখন বনভোজনে যাইতাম। পাড়ার নিকট কোনও জঙ্গলময় স্থান পরিষ্কার করিয়া • সেখানে উনান করিয়া প্রত্যেকের বাড়ী হইতে কাঠ কুটা চাল ডাল বহিয়া লইয়া যাইতাম। বালিকার রাধিত, বালকেরা হইত নিমজ্জিত ব্রাহ্মণ, এবং তাহদের মা খুড়ী জেঠীরা হইতেন অতিথি। পরম মুখে বনভোজন হইত। শেয়ালখাকী আমাদের সঙ্গে সমস্ত দিন বনে থাকিত । আহারান্তে আমরা যখন বনে লুকোচুরি খেলিতাম, তখন শেয়ালখাকী বনের মধ্যে লুকাইত, আমরা খুজিয়া বাহির করিতাম। আমরা তাহাকে খেলার সঙ্গী বলিয়া জানিতাম । শেয়ালখাকীর দুইটি কীর্ত্তি স্মরণ আছে। একবার আমরা কয়েকজন বালকে পরামর্শ করিলাম যে প্রতিরেশীদের একটা পুরাতন ভাঙ্গা দালানে ঢুকিয়া পায়রা ধরিব। ঐ দালানের মধ্যে অনেক পায়রা খার্কিত। আমরা মধ্যে মধ্যে ঘরে ঢুকিয়া দ্বার জানালা বন্ধ করিয়া তাড়া দিয়া পায়রা ধরিতাম। কিন্তু দ্বার জানালা ভাঙ্গিয় তাহাতে এত গর্ত্ত হইয়াগিয়াছিল যে সেগুলি বন্ধ করিবার জন্য প্রায় পাঁচ-ছয়জন বালককে ঘরে প্রবেশ করিতে হইত। দরজা জানালার গর্তে গর্তে পিঠি দিয়া একএকজন বালক দাড়াইত, আর একজন পায়রাদিগকে তাড়াইয়া ধরিত। সেদিন আমাদের পাঁচজনের মধ্যে চারিজিন বৈ জুটল না। আমরা আরএকটি বালক খুজিয়া বেড়াইতেছি, এমন সময়ে দেখি শেয়ালখাকী আসিতেছে। শেয়ালথাকীকে দেখিয়া আমরা আনন্দিত হইলাম, ভাৰিলাম আর বালকের প্রয়োজন নাই শেয়ালখাৰুীর দ্বারাই কাজ চলিবে। বলিলাম “শেয়ালখাকি! আয় আয় পায়রা ধরিতে যাই।” শেয়ালখাকী অমনি প্রস্তুত। আমাদের সঙ্গে চলিল। ঘরের ভিতর ঢুকিয়া এক