পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

66 Ved জেলসাৎ হইয়া এ রাক্ষসী বিবাহে আমাদের সপত্নীত্ব সম্বন্ধ লাভ कदिशाछिठल । ধরা পড়িবার পর ক'দিন কুঠীবদ্ধ ছিলাম মনে নাই, তবে সে কয়দিন যে এক একটি চব্বিশ পহরী বৎসরের আকার ধারণ করিয়া আমাদের বুকে চাপিয়া বসিয়াছিল তাহার কারণ অনেক। প্ৰথমতঃ হঠাৎ ধরিত্রী ও আকাশ, গাছপালা সব কিছু হইতেই ছিন্ন হইয়া, শুধু শ্যামল মাটির তৃষ্ণা, মুক্ত নীল আকাশের তৃষ্ণা, ফলফুল ডালপালার বিরহই আমাদের কাতর করিয়া তুলিল। আমরা জীবনে অযাচিত যাহা পাই, না হারাইলে তাহার মৰ্ম্ম, তাহার সুখদ-স্পৰ্শ বুঝি না, শুধু আপন অজ্ঞাতে তাহ ভোগ করিয়া চলি । তাহার পর সাত হাত লম্বা পাচ হাত চওড়া ঘরের চারটা দেওয়াল ও তিনদফা পাচিলের চাপ, সে যেন রাশি রাশি ইটের স্তুপের পাজাবন্দী হইয়া আছি, যেন কংস-কারাগারে দেবকীর বুকে রাক্ষসেরা পাষাণ-প্ৰাণে মারিতেছে না, কেবল শ্বাসরোধ করিয়া মৃত্যু-যন্ত্রণার আস্বাদন জীয়ন্তেই করাইতেছে। তাহার পর হঠাৎ কথা বন্ধ ! সে কি যন্ত্রণা। শুধু মনের সুখে আবোল তাবোল বকিয়া যাওয়াই যে এত বড় আনন্দের কারণ তাহা কে জানিত । শুধু কথা না বলিতে পাইলে পেট যে ঢাকাই জালা হয় ও প্ৰাণ-পক্ষী দেহ পিঞ্জরে যে কি পরিমাণ ছটফট করে তাহা তখন উপলব্ধি হইতে লাগিল। চুরিচামারি করিয়া পাশের ঘরের সহিত দু'টা কথা বলিতে গেলে আবার প্রহরী চেড়ীর দল “হা হা কর কি, কর কি” রবে ধাওয়া করিয়া আসে। আমাদের মৌনী বাবা হওয়াই নাকি আইন, এই কাষ্ঠ-মৌন ভঙ্গ করিলেই শাস্তি, সে শাস্তি চার দিন ফেন ভাত ও আরও কত দুৰ্গতি । তাহার পর আমাদেরই মধ্যে কে জানি না প্রহরীদের হস্তে কিঞ্চিৎ দক্ষিণ দিবামাত্র এত আইন কানুন। হঠাৎ সরল হইয়া গেল, শেষে তাহারাই পাহারা দিত, কোন অফিসার আসে কি না, আর আমরা সলজ নবোঢ়া বধূর মত চাপা গলায় আশে পাশের পিঞ্জীরস্থ শুক সারির সহিত দু’টা মনের