পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বারীদ্রের আত্মকাহিনী و আর মনে নাই। সেখানে গৃহস্বামীর কোন তরুণ আত্মীয় আমায় একটি অভিনব প্রশ্ন করেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “আচ্ছা, আপনাদের দেশে পথে ঘাটে স্ত্রীলোকের উপর এত অত্যাচার হয় কেন ? আমাদের দেশে কখন ওরকম ব্যাপার হতে শুনেছেন ? এই একটু আগে দেখলেন দু’তিনটি মেয়ে সঙ্গে নিয়ে আমার বোন ষ্টেসনে গেলেন, সঙ্গে পুরুষ মাত্র নেই, নিজেরাই টিকিট করবেন, নিজেরাই মাল-পাত্তর সামলাবেন। আমার বোধহয়, অবরোধে বহু যুগ বন্ধ রেখে, পরপুরুষকে ভােয়র সামগ্ৰী বলে দেখতে শিখিয়ে, আপনার ঘরের মা বোনকে এমন অসহায় নিঃশক্তি করে ফেলেছেন যে, বিপদে আততায়ীকে আক্রমণ করা দূরে থাক, তারা আত্মরক্ষাও করতে পারেন না।” কথাটা এতদূর সত্য যে নিতান্ত অপ্রিয় ও অরুচিকর হইলেও আমায় প্ৰায় নীরবে মাথা পাতিয়া মানিয়া লইতে হইল। না মানিয়া করি কি ? আমাদের দেশের পুরুষ ও নারী সাঙ্খ্য-পুরুষ ও সাঙ্খা-প্ৰকৃতি, একজন খোড়া ও ঠুটাে, আর একজন কাণা। পাছে নারী পথ দেখিয়া চলে, তাই খোড়া আপন শক্তিকে চক্ষে আঙ্গুল দিয়া অন্ধ করিয়াছে। তাই এদেশের শক্তি রাঙতার তলোয়ার, সে আসি কাটে না, মজায়। বঙ্গের নারী মৃন্ময়ী দেবী, পুরুষের ইঙ্গিতে তাহষ্কারই কামনার পুতুল ঘুরে, ফিরে, চলে, বলে। অন্দর, পর্দা, ঘোমটা, মূর্থিতা, বাল-মাতৃত্ব আর রোগের সপ্তপাকে বাঙালীর মেয়ে জীবন্মতা। তাহার পর সুরাট । সে এক ঐন্দ্ৰজালিক কাণ্ড । নবজাগ্ৰত ভারতের সে সফল স্বপ্নছবি ভুলিবার নয়! ষ্টেসনের কাছে কংগ্ৰেসক্যাম্পের সন্নিহিত মডারেট শিবির, সকলগুলিই তাবু ও সাহেবী কেতায় সাজান । সুরাট নগরীর মাঝখানে কতকগুলি দেবমন্দির ও বাড়ী জুড়িয়া বিশাল ন্যাশনালিষ্ট ক্যাম্প। এখানে পাচ টাকার টিকিট কিনিলে কংগ্রেসের কয়দিন চব্য চোষ্য আহার মিলে, জাতিবিচার ছুতি-মার্গের এখানে নাম গন্ধ নাই। অরবিন্দের স্থান একটি