পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বারীদ্রের আত্মকাহিনী ولا দেওয়ালে বর্গের সংখ্যা ও বর্ণের সংখ্যা হিসাবে টোক মারিয়া, সঙ্কেতে অক্ষর বুঝাইতে হইবে। ধরুন পাশের কুঠুরীর মানুষকে বলিতেছি, “Barin”, তাহা হইলে প্ৰথমতঃ একটা ডবল টোকা ও পাচ সেকেণ্ড। পরে দু’টা সিঙ্গল ( Single ) ছুটো টোকা দিলেই “B” অক্ষরটি বুঝাইবে ; তাহার পর একটা ডবল টোকা ও কিছু পরে একটা সিঙ্গল টোকা দিলেই “a” বুঝাইবে। “r” অক্ষরটি বুঝাইবার সময়ও এই নিয়মে চারটি ডবল টোকায় চতুৰ্থ বৰ্গ বুঝাইয়া, তিনটি ছুটো টোকায় তৃতীয় বর্ণ “” বুঝাইতে দুটি ডবল টোকা ও ৪টা ছুটাে টোকা এবং সবশেষে “n” তিনটি ডবল টোকা ও চারটি ছুটো টোকায় বুঝাইয়া একটা আলাদা টোকা দিলেই কথাটি পূর্ণ হইল জানানাে হইবে। এই কু-কাৰ্য্য করিতে করিতে কেহ আসিয়া পড়িলে, টেলিগ্ৰাফ receiver-কে সতর্ক করিবার জন্য দেওয়ালে গুম করিয়া একটা কিল মারার প্রথা ছিল । শীঘ্রই এই বেতারা টোকাগ্রাফ আমাদের মক্সো হইয়া গেল, প্রহরীরা প্ৰথম প্ৰথম বাধা দিত, শেষে দাড়াইয়া মজা দেখিত । শ্রোতা দেওয়ালে কাণ দিয়া থাকিলে এমন আস্তে টোক মারা যায় যে পাশের ঘরের মানুষ শুনিতে পাইবে কিন্তু বাহিরের প্রহরী টের পাইবে না । ইহার পর কথা বলার দুঃখ না ঘুচিলেও, মনের ভাব বিনিময়ে দুঃখের অনেকখানি লাঘব ঘটিল। কোন একটা বিশেষ কিছু ঘটিলে টোকাগ্রাফের মহিমায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ৪৪টি কুঠুরীতেই সংবাদটুকু পহুছিয়া যাইত। কুঠুরীতে আসিয়া পূর্বের সকল সুখ-সুবিধাই হারাইতে হইল, রোগ হইলে গোলার আসামীকে আর হাসপাতালে লওয়া হইত না, কুঠুরীতেই পড়িয়া পড়িয়া মনের সুখে জ্বরে কেঁ কেঁ এবং পেটের অসুখে মুহুমুহু শৌচক্রিয়াদি করিতে হইত। ঔষধ পথ্য যৎকিঞ্চিৎ সেইখানেই আসিত, কম্পাউণ্ডারের সময় ও সুবিধা বুঝিয়া, রোগের বিক্রম বুঝিয়া আদৌ নহে। এইরূপে আমাদের দুঃখের দিন কাটিতে লাগিল। ক্রমে আন্দামান হইতে আমদানী হইয়া হিল