পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“NAS ਤੋਟਝਛ ਕੇਤ মনে আছে, সে দিনকার প্রভাতটি ছিল শ্বেত শতদলের মত তেমনি শুভ্ৰ, তেমনি প্ৰসন্ন । এই সময় সকালে সু্যানের পর বেলা আটটায় আমি সাধনায় বসিাতাম । জীবনের ক্ষীরস্রোতা ও কামনার পঙ্কবাহিনী তখন একসঙ্গেই বহিতেছিল, দুই ধারা মিলিয়া কখন যে উজানে বহিবে ভাগবতমুখী হইয়া, সে ধারণাও তখন বড় অস্পষ্ট । নিশ্চিন্ত মনে আমি স্নান করিতেছিলাম। ধরণীর উদ্যামুগ্ধ সে শান্ত উজ্জল তপনশ্ৰী ছবি দেখিয়া কে বলিবে যে প্ৰকৃতির বুকে তখনই অমন অগ্ন্যুৎপাত আসন্ন হইয়া রহিয়াছে ? সব দেখিয়া দেখিয়া বোধ হয় এ যেন দুটি জগৎ, প্রকৃতির স্বতঃস্ফূর্ত নির্লিপ্ত অকাম লীলা একদিকে, আর মানুষের কামনার দ্বন্দ্ব-দ্বেষের গড়া মানস জগৎ আর একদিকে ; এ দুটির কেহ কাহারও দিকে ফিরিয়া চাহে না, অথচ দুইটিই পাশাপাশি চলে। একটি যেন শান্ত শীতল পট আর একটি চঞ্চল জীবন্ত ছবি, একটি কোলে করিয়া আর একটিকে ফুটায় । হঠাৎ একটা দুটাছুটি হট্টগোল পড়িয়া গেল। আমি সুন্নানের পৈঠার উপর দাড়াইয়া দেখিলাম, হাসপাতালের দিকে মানুষ দৌড়াইতেছে, কাছে চাহিয়া দেখিলাম স্নান-রত-র মুখে স্মিত হাসি, উদ্বেগের কৌতুহলের চিহ্ন মাত্র নাই, কেমন একটু সঙ্কোচ ও কৌতুক লইয়া সে আপন মনে স্নানই করিতেছে। তখন আর আমার বুঝিতে বাকী রহিল না যে, যাহা হইবার তাহা হইয়া গিয়াছে। আমরা সবাই তাড়াতাড়ি ব্যারাকে ঢুকিলাম, প্রহরী দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিল ।