পাতা:পালামৌ.djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২০
পালামৌ


কারণ, আর এক সময় সমালোচনা করা যাইবে। এক্ষণে এ সকল কথা যাউক, অনেকের নিকট ইহা শিবের গীত বোধ হইবে। কিন্তু এ বয়সে যখন যাহা মনে হয়, তখনই তাহা বলিতে ইচ্ছা যায়; লোকের ভাল লাগিবে না, এ কথা মনে তখন থাকে না। যাহাই হউক, আগামী বারে সতর্ক হইব। কিন্তু যে কথার আলোচনা আরম্ভ করা গিয়াছিল, তাহা শেষ হয় নাই। ইচ্ছা ছিল, এই উপলক্ষে বাঙ্গালীর কথা কিছু বলি। কিন্তু চারি দিকে বাঙ্গালীর উন্নতি লইয়া বাহবা পড়িয়া গিয়াছে; বাঙ্গালী ইংরেজী শিখিতেছে, উপাধি পাইতেছে, বিলাত যাইতেছে, বাঙ্গালী সভ্যতার সোপানে উঠিতেছে, বাঙ্গালীর আর ভাবনা কী? এ সকল তো বাহ্যিক ব্যাপার। বঙ্গসমাজের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার কি একবার অনুসন্ধান করিলে ভাল হয় না? শুনিতেছি, গণনায় বঙ্গবাসীদের সংখ্যা বাড়িতেছে। বড়ই ভাল!


 পূর্ব্বে একবার “লাতেহার” নামক পাহাড়ের উল্লেখ করিয়াছিলাম। সেই পাহাড়ের কথা আবার লিখিতে বসিয়াছি বলিয়া আমার আহ্লাদ হইতেছে। পুরাতন কথা বলিতে বড় সুখ, আবার বিশেষ সুখ এই যে, আমি শ্রোতা পাইয়াছি। তিন চারিটি নিরীহ ভদ্রলোক, বোধ হয় তাঁহাদের বয়স হইয়া আসিতেছে, পুরাতন কথা বলিতে শীঘ্র আরম্ভ করিবেন এমন উমেদ রাখেন, বঙ্গদর্শনে আমার লিখিত পালামৌ-পর্য্যটন পড়িয়াছেন; আবার ভাল বলিয়াছেন। প্রশংসা অতিরিক্ত; তুমি প্রশংসা কর আর না কর, বৃদ্ধ বসিয়া তোমায় পুরাতন কথা শুনাবে; তুমি শুন বা না শুন সে তোমায় শুনাবে, পুরাতন কথা এইরূপে থেকে