পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগৎশেঠ। २१ বামা । বামাদেবী স্বপ্নে দেখিয়াছিলেন যে, আদি জিনেশ্বর তঁাহার গর্ভে জন্মগ্ৰহণ করিয়াছেন। পার্শ্বদেব গর্ভে অবস্থানকালে বামাদেবীর এইরূপ জ্ঞান হইত যেন তিনি নিজ পাশ্বে একটি সৰ্প ধারণ করিতেছেন, এই কথা তিনি মুখেও ব্যক্ত করিতেন। সেই কারণে র্তাহার পিতা তঁহাকে “পার্শ্ব” বলিয়া অভিহিত করেন। পার্শ্বনাথের বাল্যকাল ও যৌবনকাল নির্দোষে অতিবাহিত হইয়াছিল, বাৰ্দ্ধক্যে তিনি কাশীবাস পরিত্যাগ করিয়া সম্মেত পর্বতে প্ৰাণত্যাগ করেন । তিনি শত বৎসর জীবিত ছিলেন, তাহার জীবনের অধিকাংশ কালই উপদেশপ্ৰদান ও ধৰ্ম্মপ্রচার প্রভৃতি সদনুষ্ঠানে অতিবাহিত হইত। জৈনদিগের চতুৰ্বিংশতিতম তীর্থঙ্কর মহাবীরও জৈনধৰ্ম্মপ্রচারের জন্য অপরিসীম যত্ন করিয়াছিলেন। আবু, গির্ণার, শত্রুঞ্জয় ও পার্শ্বনাথ পৰ্ব্বত জৈনদিগের প্রধান তীর্থ স্থান। ইহাদের মধ্যে শত্রুঞ্জয় মাহাম্ম্যে প্ৰসিদ্ধ। জৈনদিগের পূজক ও সাধুদিগকে যতি কহিয়া থাকে। তাহারা জৈনধৰ্ম্মের দার্শনিক মতের বিষয় সম্যক অবগত নহেন। ধৰ্ম্মই জগতের সার, যেহেতু ধৰ্ম্মই সুখমাত্রের প্রধান কারণ, ধৰ্ম্মের উৎপত্তি কারণ মনুষ্য, সেই কারণে মনুষ্য জীবের সার, যদ্বারা মনুষ্যের উৎকর্ষ-লাভ হয়, তাহাই ধৰ্ম্ম—ইত্যাদি কতিপয় স্থূল নীতিমাত্ৰ ইহারা অবগত আছেন। দেবমন্দিরে পাঠ, সাধুদিগের বন্দনা, তীর্থভ্ৰমণ, পরম্পর মিত্ৰভাবে অবস্থান ও ইন্দ্ৰিয়দমন এই পাঁচটি যতিদিগের অবশ্য কৰ্ত্তব্য কাৰ্য্য বলিয়া উল্লিখিত হয়। মুখবন্ধন, পিচ্ছিকাগ্ৰহণ, কেশোলুঞ্চন প্রভৃতি কয়েকটি জৈনদিগের অসাধারণ ধৰ্ম্ম আছে, অন্য কোন জাতির মধ্যে এ সকল দৃষ্ট হয় না। শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর ভেদে জৈনেরা সাধারণতঃ দুইটি প্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত। তঁহাদের সাধারণ "লক্ষণ এই যে, শ্বেতাম্বরের ক্ষমাশীল, সঙ্গ-রহিত কেশসংস্কার-বিহীন ও ভিক্ষান্নভোজী হইয়া থাকেন। দিগম্বরের পিচ্ছিক ও পয়ঃপাত্ৰধারী এবং নিরাবরণ অর্থাৎ উলঙ্গ । শ্বেতাম্বরেরা বস্ত্ৰ পরিধান করেন। তাহারা স্ত্রীসম্ভোগে একান্ত বিরত, কিন্তু দিগম্বরের রত। জগৎশেঠগণ পূর্বে উক্ত শ্বেতাম্বর জৈনসম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন, পরে বাঙ্গালার বৈষ্ণবধর্ম 3家 করেন। W