বাঁচি।” ব্রাহ্মণ বংশে জন্ম গ্রহণ করেছিলাম বলেই বর্ণ বৈষম্য ভাল করে বুঝতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমি সেই পাপ বর্ণ বৈষম্যকে যেমন করে ঘৃণা করি, ভারতের অন্তস্থলের কালোদাগ জাতিভেদকেও তেমনি ঘৃণা করি।
কয়েকদিন ক্রমাগত অতি কষ্টে কাটিয়ে যখন আমরা চিকাগোর কাছে আসলাম তখন রাত দুটা হয়েছিল। চিকাগোতে যথাস্থানে পৌঁছাতে আরও তিন ঘণ্টা কেটে গেল। চিকাগোের লোক ঘুমিয়ে আছে অথবা জেগে আছে তা বুঝবার শক্তি নাই কারণ তখনও লোক পথে ঘাটে দিনের বেলার মতই চলছিল। আমরা নিগ্রোদের বাসস্থান ছেড়ে এমন একটি স্ট্রীটে আসলাম যার একদিকে নিগ্রোদের বাসস্থানের শেষ এবং শ্বেতকায়দের বাসস্থানের শুরু হয়েছে। রাতের বেলায়ই আমি বুঝতে পেরেছিলাম এই স্থানটিতে লোকের মনের ভাব কত নিকৃষ্ট হয়ে গেছে। পরে এসে সেই এভাবটি কতদূর নীচ স্তরে নেমেছে তা বুঝতে পেরেছিলাম। মানুষ মানুষকে কি রকমে ঘৃণা করতে পারে তা এখানে আসলেই বুঝা যায়।
শ্বেতকায়দের ওয়াই এর দরজা খোলাই ছিল। শ্রীযুত ঘোষ এবং হরিদাস আমাকে একটি ওয়াই-এর রুম ভাড়া করে দিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন। তারা বলে গিয়েছিলেন পরের দিন বিকালে চারটার সময় এসে আমার সংগে দেখা করবেন।
আমি যে রুমটি ভাড়া করেছিলাম তা ছিল ১৩ তলায়। তের সংখ্যা আমেরিকাতে অপয়া সংখ্যা বলে সকলেই এটিকে এড়িয়ে চলতে চায়। আমার কাছে তের নম্বরের কোনও মাহাত্ম্য ছিল না। তাই বিনা দ্বিধায় ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র রেখে ভাবলাম আগে একটু স্নান করি, তারপর সকালের আহার সেরে নিয়ে সকাল বেলার সংবাদপত্র পাঠ করে একটু ঘুমাই।