পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



আজকের আমেরিকা
১৬১

বললেন “টিকেট নিশ্চয় পাবেন, তবে নিগ্রো বলে হয়ত জাহাজে কোথাও বসতে দিবে না।” যাই হ’ক, একখানা টিকিট কিনলাম এবং জাহাজের একটা সীটে গিয়ে বসলাম। বাপরে! কত লোক আমার প্রতি যে কঠোর দৃষ্টি নিক্ষেপ করল, তার আর শেষ নাই। সকলের দৃষ্টিই যেন বলতে চায়, “উঠে যা কালো ভূত। প্রত্যেকের দৃষ্টিতেই আমার প্রতি ঘৃণাসূচক একটা ভাব প্রকাশ পাচ্ছিল। আমি তাদের দেখেও না দেখবার ভান করে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছিলাম।

 নায়গ্রা প্রপাত দেখে অনেকের মনে কবিত্ব আসে। অনেক সুন্দর বই লেখে। সেই বইয়ের খুব কাটতি হয়। আমি প্রপাতে এসে সুখী হয়েছিলাম বটে, কিন্তু এক বিষয়ে একটা কাঁটা মনের মধ্যে বিদ্ধ হয়ে ছিল। ওই যে কতকগুলি চোখ, ঘৃণার বশবর্তী হয়ে আমার দিকে ক্রমাগত তাকাচ্ছিল তাতে মন অসুস্থ বোধ করছিলাম। এত শিক্ষা দীক্ষাতেও কেন যে এদের মনের ঘৃণ্য ভাব দূর হয় না, তা আমি কোনও মতেই ভেবে পাই নি। আমার চামড়াটার কালো রংএর জন্য যে আমি দায়ী নই তা ত বোঝা উচিত। এরূপ মনোভাবের লোক সকল দেশেই আছে কিন্তু এখানে খুবই কম। তার কারণ কি? এদের কখন পরিবর্তন আসবে। তাই ছিল বিবেচ্য বিষয়। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে আমেরিকায় কালার বার থাকবে না, কারণ অশ্বেতকায়দের মাঝে বেশ সাড়া পড়েছে এবং কোথায় অশ্বেতকায়দের দুর্বলতা অনেকেই তা অনুভব করে মনের উন্নতির চেষ্টা করছে।

 প্রপাতের কাছে যতই জাহাজখানা কেঁপে কেঁপে অগ্রসর হচ্ছিল ততই বৃষ্টির মত জল এসে আমাদের উপর পড়ছিল। প্রপাতের উৎক্ষিপ্ত জলকণায় ভিজে প্রপাত দেখার জন্য ওয়াটার প্রুফ নিতে হয় এবং সেজন্য ওয়াটার প্রুফের ভাড়া পন্‌চাশ সেণ্ট করে প্রত্যেকের

 ১১