পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
আজকের আমেরিকা

দিলেন যাতে করে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়ে যায়। ফল তার উলটা হল, দাংগা শুরু হল। শ্বেতকায়গণ হারলামে দোকান করে বেশ দু পয়সা উপার্জন করছিল, সেটি বন্ধ হল। দাংগার কথা সংবাদপত্রে এমন ঘটা করে বার হতে লাগল যে, লোক ইটালি-আবিসিনিয়ার যুদ্ধের কথা ভুলে গিয়ে দাংগার কথা নিয়েই মেতে উঠল। আসল কথা, দাংগা হাংগামা তেমন কিছু হয় নি। আমেরিকার হফ্‌কিনী কীর্তি আমি আফ্রিকাতে কিছুটা উপলব্ধি করেছিলাম। ইউরোপীয়ানরা ইংরেজী সংবাদপত্র পাঠ করে ফেলে দিতেন না, পুড়িয়ে ফেলতেন যাতে করে নিগ্রোরা ইটালি-আবিসিনিয়ার যুদ্ধের কোনও সংবাদ না পায়।

 হারলামের এমন গির্জা নাই, এমন ক্লাব নাই, যেখানে আমি আমার আফ্রিকা-ভ্রমণের কথা না বলেছি। এই কারণেই অনেক নিগ্রো আমার সংস্পর্শে এসেছিল এবং আমাকে অন্তরের সংগে ভালবেসে তাদের দৈনন্দিন আচার-ব্যবহারের সকল দিকই আমার কাছে খুলে ধরেছিল। আমি তা শুনে সুখী হতাম এবং প্রাণ খুলে তাদের সংগে কথা বলতাম।

 আমেরিকা আজ নূতন রূপ নিয়েছে। দরিদ্র এবং ছাত্র সমাজ বুঝতে পেরেছে আর লীডার বানিয়ে দরকার নাই, ভোটাভুটিতে গিয়ে বেগার খেটে কাজ নাই; কর্তৃত্বের মূলে যাঁরা আছেন, তাঁরা থাকেন ওয়ালস্‌ স্ট্রীটের উপরতলায় বসে। জাতীয়তাবাদ, ধর্ম ও ডিমক্র্যাসির দোহাই দিয়ে তাঁরা নিজেদেরই অভিপ্রায় সিদ্ধ করেন। কাজ শেষ হয়ে গেলেই তাঁদের দরজায় “ভারি বিজি” লেখা সাইনবোর্ড ঝুলতে থাকে; তেমন করে কিন্তু আর চলবে না। মিস মেয়োও তা বুঝতে পেরেছিলেন। একদা তিনি বাজারে নিলামে বিক্রী হয়েছিলেন, আজ আর সেরূপ আত্মবিক্রীত হবার ইচ্ছা তাঁর নাই। তাই বোধ হয় তাঁর সুবুদ্ধি এসেছে, নূতনভাবে মত্ত হয়ে এবার তিনি দরিদ্র এবং ছাত্র বন্ধুদের সংগে মিশতে এসেছেন।