পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১৮৬
আজকের আমেরিকা

পিছনে ধর্মের প্রেরণা নাই, কারও আদেশ নাই; আছে শুধু ডিসিপ্লিন। অনেকের ধারণা, যাদের অভাব নাই, শৃঙ্খলা তাদেরই থাকে। আমাদের দেশে অনেকের অভাব নাই, অথচ তাদের মাঝে ডিসিপ্লিনের লেশও দেখা যায় না। মজুর সমাজকে সাধারণত পশুর সংগে তুলনা করা হয়। ফোর্ডএর কারখানার মজুরদের দেখলে মনে হয় প্রত্যেকটি মজুর ভদ্র, শান্ত এবং সভ্য। আমাদের দেশে কেরাণী, ইন্‌জিনিয়ার, ডাক্তার এরা কিন্তু নিজেদের মজুর বলতে রাজি নয়। আমেরিকার প্রেসিডেণ্ট হতে আরম্ভ করে ডিস্‌ওয়াসার সকলেই মজুর।

 মজুরের দল যখন কারখানায় প্রবেশ করে তখন তারা মাঝে মাঝে হর্ষধ্বনি করে। তাতে আমাদের দেশের অমুক কি জয়-এর মত ফোর্ডএর বা কারও নাম জড়িত থাকে না। তারা জয় দেয় নিজ নিজ জাতের―সর্বসাধারণের, কোনও ব্যক্তিবিশেষের নয়। আমাদের দেশের মজুর অনাহারে থাকে আর ফোর্ডের মজুররা পকেট ভরে মজুরি পায়, পেট ভরে খায়, প্রাণ ভরে ঘুমোয় এবং স্বচ্ছন্দে পরিশ্রম করে শরীরের রক্তচলাচল সতেজ রাখে; তাই তাদের পরিষ্কার মগজে নিত্য নূতন পরিকল্পনা জন্মাবার সুযোগ হয়। অন্য দেশের মজুরদের মাঝে যেমন দোষ গুণ সবই আছে ফোর্ডের কারখানাতেও যে দোষ একেবারে নাই তা নয়, তবে যখনই কোন দোষ দেখা দেয় এবং তা ধরা পড়ে তখনই তার প্রতিকার করা হয়। সুপারভাইজার, সাধারণ মজুর এবং ম্যানেজ্যর, সবাইকেই ফোর্ড বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তাদের মধ্যে অফিসার ও সাবঅর্ডিনেট কেউ নয়, তাঁরা সকলেই মজুর ও সহকর্মী; সকলেরই মনে রাখা উচিত এই কারখানাতে কেউ কোনওরূপ বিশেষ অনুগ্রহ পাবে না; খোশামোদকারীকে ডিসমিস করে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রমোশন সেখানে ভোটের সাহায্যে হয়, প্রমোশন