পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারিদিক থমথম করে। গজেন এসে শুধু খবরটাই দেয়নি, পাশের গা থেকে নন্দ ডাক্তারকে ডেকে আনার প্রস্তাবও সে করেছিল। লণ্ঠনটা নিয়ে ডাক্তার ডাকতে লোক চলে গেছে । বিদেশী একজন ভদ্রমানুষ তাদের দেশ গায়ে এসে বিপাকে পড়েছে, এটুকু না করলে তাদের মর্যাদা থাকে.না। শুধু পা মাচকানোর জন্য ডাক্তার !! এটা তার বাড়াবাড়ি মনে হলেও কৈলাসকে পাঠানো হয়েছে নন্দ ডাক্তারকে ডেকে আনার জন্য । কারণ গজেন আরও একটা যুক্তি দেখিয়ে বলেছিল, পায়ে যখন গুলি লাগল। কি যে না করেছিল বাবুৱা মোর জন্যে ? তাদের জন্যই তবু খুড়িয়ে হঁটিতে rf, 1 চাষীর শোভাযাত্রা করে শহরে গিয়েছিল, সেই পুরানো ঘটনা। তাই বটে ! তাই বটে ! তাদের সকলের প্রাণের মানুষ রসিককেও শহরের এক ভদ্রবাড়ির আন্তঃপুরে লুকিয়ে রেখে মেয়ে বৌরা সেবা করে বঁচিয়েছিল, হাসপাতালে গেলে একেবারে জেল ঘুরে কতদিনে সে ফিরতে কে জানে! শহরের বিদেশী মানুষটার জন্য যথাসাধ্য করতে হবে বৈকি। গজেন ঠিক বলেছে। সেই গজেনের মুখে এই কথা ! চিনতে পারলে জীবনকে সে পথের ধারেই পড়ে থাকতে দিত ! জীবন খানিক স্তব্ধ হয়ে থেকে বলে, দেখলে তে রসিক ? শুনলে তো কথা ? সারা জীবন জেল খেটে আর ত্যাগ করে কপালে কী পুরস্কার জুটেছে দেখলে তো ? আমি তো বাবা তোর ঠ্যাং খোড়া করিনি । গদি পেলে করতেন। মৃদু হাসির একটা গুঞ্জন উঠেই থেমে যায়, সে হাসির নিষ্ঠারতা প্রকট হয়ে পড়ে তাদের কাছেই। একজন শ্রান্ত আহত জীবন্ত মানুষ, অর্ধেকের বেশী চুল সাদা হয়ে গেছে, মুখে পড়েছে জীবনব্যাপী দুঃখ ও দারিদ্র্যের রেখা। তর্ক চলে, মানুষটার উপস্থিতি অবলম্বন করে প্রকাশ করা চলে প্রাণের জালা, কিন্তু সামনা সামনি তাকেই কি আর বিদ্রুপ করা যায় ! এ মানুষটার জালাও কম নয়। স্টেশনে নতুন গুড়ের সন্দেশ কিনতে বলা S?