পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিয়ে তার তেড়ে রূখে ওঠার গল্প গজেন সকলকে শুনিয়েছে। দাওয়ায় এসে বসার পর কথায় কথায় কতভাবে যে বেরিয়ে এসেছে বঞ্চিত মানুষটার অস্তিরের জালা । তবে তাদের জাল এর জালায় যেন বিষ আর আগুনের ফারাক। লক্ষ কোটি মানুষের জগৎটা এর একার জীবনের ব্যর্থতার আপসোসে আড়াল হয়ে গেছে। নইলে এতক্ষণে একবার জিজ্ঞাসা করে না বিশ বছর আগেকার দেশগ ও কর্মক্ষেত্রের খবরাখবর, পুরানো দিনের চেনা মানুষের কুশল ? বিশ বছর আগে এদিকে তার আন্দোলনে রসিক ছিল তার বড় সহায়, ছায়ার মত মুখের কথায় ওঠা বসার ভক্ত সার্থী ছিল অল্প বয়সী গজেন-আজি বুঝি সে সব কথা তার মনেও নেই। জীবনের সব স্মৃতি তুচ্ছ হয়ে গেছে দুঃখ ও ত্যাগের প্রতিদানে কি পায়নি তারই হিসাব ছাড়া । গজেন বলে, কী হ’ল চুন হলুদ ? আজ রাতে গরম হবে ? অল্প বয়সী একটি বৌ গরম চুন হলুদের বাটি এগিয়ে দেয়। জীবন আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করে, গায়ের কচি বেীদের ঘোমটা কী অস্তৃত রকম হ্রস্ব হয়ে গেছে ; এতগুলি পুরুষ ও বিদেশী একটা মানুষের সামনেও, মুখ পর্যন্ত দেখা যায়। এ অবস্থায় একদিন এই বৌটিরই বুকের কাপড়ে টান পড়িয়েও একগলা ঘোমটায় মুখটা আড়াল না করা ছিল নিন্দার কথা । রসিক বলে, ডাক্তার এসে পড়বে এখুনি, চুন হলুদটা থাকত, না কি বল ? গজেন বলে, গরম গরম লাগিয়ে দিলে আরাম হবে। ডাক্তার এলে তুলে ফেলতে কতক্ষণ ? কিন্তু চুনহলুদ পায়ে লাগাবার আগেই সাইকেলের ঘণ্টা শোনা যায় নন্দ ডাক্তারের, টর্চের জোরালো আলো নজরে পড়ে। নন্দর বয়স বেশী নয়, রোগী লম্বা চেহারা । সে দাওয়ায় উঠে পিড়িতে বসলে রসিক পরিচয় দিয়ে বলে, ইনি বড়গাঁর জীবনবাবু। স্টেশন থেকে আসাছিলেন, গর্তে পড়ে পা-টা মচকে গেছে। অনেককাল আগে গা ছেড়ে শহরে বড় ছেলের কাছে চলে গেলেও এ এলাকায় এখনো লোকে তাকে বড়গাঁর জীবনবাবু বলে চেনে। st