পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিতে আর কি, সোজা কাজ, তিলু বলে, দিতেই যে শ্বাস ওঠে রে দাদা ? ক্লাচকচিতে কাজ কি ? হাকিমের রায় দেবার স্বরে বলে ধরণী, হাট না বাজার পেলে তোমরা এটা জিগ্যেস করি ? দরদরি কোরো না বাপু । ধানের দরে টাকার স্বদে না তো দেড়ায় নেও তো নেবে, নয় তো এসো গে ভালয় ভ্যালয় । সোজা কথা । এর পর আর কথা কি ? মুহমানের মত তারা বসে থাকে। তোরাব ভাবে বাহরণের কথা, ভরা মাসের উঁচু পেটে দুরোজ অন্ন পড়েনি। চেষ্টা করে উচিত সুদে ধান মিলল না। আরও যদি চেষ্টা করে দেখতে চায়, আরও দু-এক রোজের উপোস কি সইবে বাহরণের ? ওর কিছু হলে তখন বিনা সুদে ধান পেলেই বা কি লাভ হবে। তার। ভূষণ ভাবে রোগা ছেলেটার কথা, প্রথম বিয়ানী মেয়েটার কথা, তাকে নিতে কাল জামাই এসে দুদিন থেকে যাবে, সে কথা। রসিক হিসেবী, সে ভাবে, চার বিঘে খাজনা জমির যে পনের- যোল মণ আর তিন বিঘে ভাগের চাষের পাঁচ-ছ মণ থেকে আবোয়াব আদায় বাদে থাকবে মোটামুটি পনের মণ, আগের কার্জ বাবদ যাবে সাড়ে তিন মণ সুদে আসলে, দু-এক মাস বাদে ভিটে বাধা না দিলে মরণ নির্ঘায়-দেড়ভাগিতে আজ ধান কার্জ না নিলে তাকে আগেই বাধা দিতে হবে ভিটেট, তার চেয়ে দেড় ভাগি মেনে নিলে এখন তো বঁাচবে ফসল তোলা তক। রাখাল ভাবে, বেশী খেটে, খরচা কমিয়ে, কম খেয়ে নয় পুষিয়ে নেবে বাড়তি সুদটা, উপায় কি। তিনু ভাবে, আচমকা লাফিয়ে উঠে তরফদারের টুটিটা যদি কামড়ে ধরে, মরণ-কামড় দেয় একেবারে, নিজে মরবো তবু ছাড়বে না। এমনি কামড় বসায়, তরফদার কি মরূবে, না। শুধু তার মরণখাটুনিই সারা হবে ? সবাই ভাবে, ক্ষোভে হতাশায় জলে যায় সবার বুক, এক সুরে অভিশাপ বাজে ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীগুলিতে : মরুক, মরুক তরফদার, শকুনি ছিড়ে থাক তাকে।