পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগন্নাথের বাড়িতে সপরিবারে আশ্রয় নিয়ে দুটাে রাত কাটাতে হল রাজেনকে সপরিবার লোচনের সাথেই। রাজেন ভেবেছিল, মামাকে বলে ভূষণ তাদের খেদিয়েই দেবে বেহব্দ মার-ধোর খুন-জখম বলাৎকার ঘর-পোড়ানোর তাণ্ডবের মধ্যে। তা, কথাটা লোচনও ভেবেছিল একবার, এত কালের শক্রকে জব্দ করার এমন খাসা সুযোগ আর আসবে না। জীবনে। কিন্তু দুটাে দিন বিপদে পড়ে একসাথে থাকার পর সেই থেকে বিদ্বেষ ঘুচে গেছে তাদের, পথে-ঘাটে দেখা হলে দুটাে-একটা কথা তারা বলে এসেছে পরস্পরে, কিন্তু শুধু ওই শক্রিতার অবসান ঘটা ছাড়া বেশী আর এগোয়নি- তাদের সম্পর্ক । কেউ পা দেয়নি। কারো বাড়ি, ক্রিয়া-কর্মে আপদে-বিপদে কেউ ডাকেনি। অন্যকে । এত কাল পরে রাজেন আজ নিজে থেকে এসেছে তার বাড়ি । ওকে দুটান তামাক না। টানতে দিতে পারলে কেমন লাগে মানুষের ? তিনটে বিড়ি নিয়ে আসে রসিক। তাই একটা রাজেনকে দেয় লোচন, পিদিম থেকে ধরাতে গিয়ে নিবে যায় শিখাটুকু। ফের হাঙ্গামা করতে হয় আগুন স্বষ্টি করার। দু-এক টান টেনে বিড়িটা রাজেন বাড়িয়ে দেয় তোরাব আলিকে । লোচনের তামাকের অভাব টের পেয়েই কৈলাস ইসারা করেছিল লক্ষ্মীকে । খানিক পরে কাঠের আখাব জলন্ত কয়লা দিয়ে সাজানো কলকেয় ফু দিতে দিতে গাদা ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে শ্বশুরের মান রক্ষা করে । আনমনা ছিল তোরাব । এনতার তাকে ডেকে বলে, বিডি ধরা মিয়া । এ বড় আশ্চর্য কথা যে এতগুলি মানুষ তারা বসে আছে প্রায় চুপ-চাপ ! কথার কামাই নেই বটে। কিন্তু এক সাথে কথা বলছে না এক জনের বেশী, কথার আওয়াজে মোটে সরগরম নয় চোদ্দ জন চাষীর আসর। কাটা-কাটা ছাড়া-ছাড়া সাধারণ চলতি আলাপ এটা-ওটা নিয়ে, তাই মন দিয়ে শুনছে সকলে যে যখন মুখ খুলছে। বিশেষ কিছু একটা শুনবার জন্য যেন প্রত্যাশা সকলের, আবার কথা উঠছে না বলে আগ্রহ চেপে যেন অপেক্ষাও করে আছে S as