পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R R R আশুতোষ-স্মৃতিকথা আমরা যে যেখানে ছিলাম, যে অবস্থায় ছিলাম, ছুটিলাম। মনে হইল, পৃথিবী যেন নিমনুষ্য হইয়াছে,—সুর্য্যের আলো ফুরাইয়া গিয়াছে ! হাওড়া ব্রিজের কাছে অসম্ভব ভিড় । এই ভিড় ক্রমশঃ বাড়িতে লাগিল, মনে হইল যেন কৌস্তুভ, কোহিনুর অতল গঙ্গা-গর্ভে হারাইয়াছে, জনসাধারণ উন্মত্ত-ভাবে তাহা খুজিতে যাইতেছে! কি দুৰ্দৈব । সেদিন হাওড়া ব্রিজ খোলা,-অন্য দিন দুই ঘণ্টা পরে তাহ যাতায়াতের জন্য ঠিক হইয়া যায়, কিন্তু সেদিন প্রভাত গড়াইয়া মধ্যাহ্নে ডুবিয়া গেল, তথাপি সেতু ব্যবহার-যোগ্য হইল না। এরূপ বিলম্ব তো কোন কালে হয় না। — লোকে বলিতে লাগিল, এই বিলম্ব ইচ্ছাকৃত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেতুর একটা শিকল ছিড়িয়া গিয়াছিল, এইজন্য সেদিন সকাল সাড়ে নয়টার সময়ে তাহ যাতায়াতের জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা থাকিলেও বেলা দুইটার পূর্বে ঠিক করিতে পারা গেল না। সকাল ৭টা হইতে বিকাল ২টা পর্য্যন্ত সেতু বন্ধ ছিল,-এরূপ বিলম্ব সচরাচর ঘটে না । সমস্ত দিক দিয়াই সে দিনটা মস্ত বড় একটা দুদিন । আমাদের তখন মনের যে অবস্থা, সাতার কাটিয়া নদী পার হইতে হইলেও আমরা সেই বুকি গ্রহণ করিতে সঙ্কল্প করিয়া বসিলাম। অবশেষে আমাদের মধ্যে কেহ কেহ ‘ফেরি-নৌকা-যোগে, কতক ষ্টীমারে ওপারে গেলেন,- দেখিলাম, সমগ্র বাঙ্গলাদেশ সেখানে ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। লোকে লোকারণ-কেবল অগণিত নর-মুণ্ড । সেই শোক-বিমূঢ় জন-সমুদ্রের মধ্যে কত রাজা, মহারাজা, কত উচ্চপদস্থ রাজকর্ম্মচারী-ক’ত ইউরোপীয় এবং ভারতবাসীকে দেখিলাম, তাহার সংখ্যা কে করিবে ! পাটনার সুপ্রসিদ্ধ হাসান ইমাম সাহেব আশুতোষের শবদেহের জন্য স্পেশাল ট্রেণের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। লেভী মুখাজী পাটনা যাইবার পথে বাজা পর্য্যন্ত যখন পৌছিলেন, তখন কলিকাতা হইতে সেখানে রেলওয়েঅফিসারের নিকট আশুতোষের মৃত্যু-সংবাদ আসিল । পাটনা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি তথাকার ষ্টেশন পর্যন্ত শবের অনুগমন করিয়াছিলেন। নিৰ্দ্ধারিত সময়ের দীর্ঘ চারি ঘণ্টা পরে, বেলা