পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (দ্বিতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যবহার করলুম না, তুলে রাখলুম। ফলে আমি যা ভেবেছিলুম তাই ঘটল। উমেদার যখন কিছুদিন হঁাটাহঁাটী করে চাকরীর বিষয়ে হতাশ্বাস হোলো, তখন বিদায় নেবার সময় বল্লে, “মশাই, তবে পাটির দামটা পেলে ভাল হয়’। আমি বল্লুম, “বাপু, আমি তোমার পাটি একদিনের জন্যে ব্যবহার করি নি, ঐ দেখ, তোলা রয়েছে, তুমি ফেরত নিয়ে যাও।” উমেদার কতকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে পাট নিয়ে বিদেয় হোলো ।” ১৮ * ... */ “সাধারণ ব্রাহ্মণ .ܶܕܘܐܬܘܪܐ শেষাশেষি, বিশেষতঃ বিধবাবিবাহ ব্যাপারের পর, বিদ্যাসাগরের বিলক্ষণ অশ্রদ্ধা হইয়া গিয়াছিল। আমি বড় বড় দিগগজ অধ্যাপকদিগের বিষয় বলিতেছি না ; তাহাদিগকে তিনি যাবজীবন পূজনীয় জ্ঞান করিতেন, যথেষ্ট ভক্তি করিতেন এবং অকাতরে অর্থদানও করিতেন। কিন্তু র্যাহারা দু' দশ পাতা সংস্কৃত পড়িয়া ডেপোমি করিয়া বেড়ান, এবং বিদায়ের লোভে চারিদিকে হঁাটাহাটি করেন, তাহাদিগকে তিনি ইদানীং “ল্যাজকাটা’ বা ‘টকিদাস’ এ ছাড়া অন্য নাম দিতেন না। চাণক্যের একটি শ্লোক আছে-“পণ্ডিতে চ গুণঃ সর্ব্বে মুখে দোষাহি কেবলং” এই শ্লোকটিয়া প্রকৃত ব্যাখ্যা উল্টাইয়া দিয়া একটি পরিহাসের ব্যাখ্যা লালমোহন নামক এক ব্যক্তি বাহির করিয়াছিলেন। লালমোহন প্রসিদ্ধ দুৰ্গাচরণ ডাক্তারের ভ্রাতা ছিলেন, সহোদর কিনা ঠিক বলিতে পারি না । অর্থটা হইল। এই-পণ্ডিতের সবই গুণ, দোষের মধ্যে খালি মূখর্ব। বিদ্যাসাগর এই পরিহাসের ব্যাখ্যাটি লইয়া সর্ব্বদাই আমোদ করিতেন এবং বলিতেন যে, লালমোহন শ্লোকের অর্থটা ঠিকই করিয়াছে। বিধবাবিবাহ ব্যাপারের পর অশ্রদ্ধা হইবার আরও কান্ধীয়" এই যে, প্রথমে অনেকে তাহার পক্ষে সায় দিয়া শেষে অর্থলোভে স্বচ্ছন্দে বিপক্ষের দলে মিশিয়া গেল। ইহাতে তিনি ঐ পণ্ডিত জাতির উপর হাড়ে চটিয়া গিয়াছিলেন । “প্রথম বয়সে বিদ্যাসাগরের দেহটি বেশ মজবুৎ ছিল। আকার খর্ব বটে, কিন্তু এ দিকে খুব গ্যাটাগোটা যাহাকে সংস্কৃতে ‘অবষ্টন্ধ” বলে, সেই গোছের ছিল। তিনি শারীরিক পরিশ্রমও খুব করিতে পারিতেন, এবং খুব পথ চলিতে । পারিতেন। তঁাখার জন্মভূমি বীরসিংহ গ্রাম কলিকাতা হইতে বিশ ক্রোশ দূরে। i. কিন্তু বিদ্যাসাগর প্রাতঃকালে যাত্রা করিয়া সদ্যই হাঁটা পথে বাড়ী পৌঁছিতেন, পায়ে কেবল এক চটি জুতা, হয় তা বাের আনা পথ শুধু পায়েই যাইতেন, গ্রীষ্মণ । কালের মধ্যাহে*রৌদ্রও ভ্রক্ষেপ করিতেন না। এই হাঁটাপথে যাইবার সমন্ধে ।