পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল ዓ8 কহিলেন, বেশ তাই যদি তার ইচ্ছে, সে নিজে এসে স্পষ্ট করে বলে না কেন ? এমন করে তোমার ভাইকে দিয়ে, তোমার বাপকে দিয়ে আমাকে দিবারাত্রি অপমান করাচ্ছে কেন ? অথচ গোকুল যে ইহার বাষ্পও না জানিতে পারে, এমন কি তাহাকে সম্পূর্ণ গোপন করিয়াই যে এই ক্ষুদ্রাশয়েরা তাহাদের বিষদন্ত বাহির করিয়া দংশন করিয়া ফিরিতেছিল, এ কথা ভবানীর একবার মনেও হইল না। কিন্তু বধু ত আর সে বধু নাই ! সে তৎক্ষণাৎ প্ৰত্যুত্তর করিল, অপমান কে কাকে করেচে, সে কথা দেশশুদ্ধ লোক জানে। আমার নিজের জিনিস যদি আমি চোরের হাত থেকে বাচাবার জন্যে, আমার বাপ ভাইকে তুলে দিতে যাই, তাতে তোমার বুকে শূল বেঁধে কেন মা ? আর একজনের জন্যে আধ। একজনের সর্বনাশ করাটাই কি ভাল ? ভবানী আত্মসংবরণ করিয়া ধীব ভাবে বলিলেন, আমি কার সৰ্ব্বনাশ করেছি মা ? বধু কহিল, যাদের করেচ তারাই গাল দিচ্চে। এতে তিনিই বা কি করবেন, আর আমিই বা করব কি ! ইট মারলেই পাটুকেলটি খেতে হয়-তাতে বাগ করলে তা চলে না মা । বলিয়া বধু চলিয়া গেল। ভবানী স্তম্ভিত হইয়া কিছুক্ষণ দাড়াইয়া থাকিয়া ধীরে ধীরে নিজের ঘরে গিয়া শুইয়া পড়িলেন। স্বামীর জীবদ্দশায় তাহার সেই গোকুল এবং সেই গোকুলের স্ত্রীর কথা মনে করিয়া, অনেকদিন পর আজ আবার তাহার চোখ দিয়া জল পড়িতে