পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল (28 সমস্ত চোখমুখ রাঙা হইয়া উঠিল। দাদার স্বভাব সে ভালমতেই জানিত। সুতরাং নিরস্ত করিতে না পারিলে দাদা যে কোথায় গিয়া দাড়াইবেন, তাহার কোন হিসাব-নিকাশই छेिश न । একটা কথা শুনুন, বলিয়া সে একরকম জোর করিয়াই হাত ধরিয়া গোকুলকে একপাশে টানিয়া লইয়া কহিল, দাদা, আমাকে কি আপনি এক্ষুণি বাড়ি থেকে তাড়াতে চান ? এরকম করলে আমি ত একদণ্ডও টিকতে পারি নে। গোকুল ভীত হইয়া কহিল, কেন ? কেন ভাই ? কতদিন বলেচি আপনার এ অত্যাচার আমি সহ্য করতে পারি। নে ; তবু কি আপনি আমাকে রেহাই দেবেন না ? আমার মতন পাশ-করা লোক গলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াচ্চে যে ! বলিয়া বিনোদ ক্ষোভে অভিমানে মুখখানা বিকৃত করিয়া স্বস্থানে ফিরিয়া আসিল । গোকুল লজ্জায় এতটুকু হইয়া অন্যত্ৰ চলিয়া গেল। বোধ করি বলিতে বলিতে গেল, এরূপ কৰ্ম্ম সে আর করিবে না । অথচ আধা ঘণ্টা পরে বিনোদ এবং বোধ করি উপস্থিত অনেকের কানে গোল-গোকুল চীৎকার করিয়া একটা ভূত্যকে সাবধান করিয়া দিতেছে-ছোটবাবুর অনার গ্রাজুয়েটের সোনার মেডেলটা যেন সকলে হাতে করিয়া, ঘাটাঘাটি করিয়া নোংরা। করিয়া না ফেলে। ডেপুটিবাবু একটুখানি মুচুকিয়া হাসিয়া বিনোদের মুখের প্ৰতি চাহিয়া অন্যদিকে মুখ ফিরাইয়া লইলেন।