পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ऐवडूt$द्र ऎऐन R বিনোদ কলিকাতায় থাকিয়া এম-এ পড়ে। বৈকুণ্ঠ নাতিনাতনীর মুখ দেখিয়া পরম সুখে মরিতে পারিত, কিন্তু কিছুদিন হইতে ছোটছেলের সম্বন্ধে নানাপ্রকার কুৎসিত জনশ্রুতিতে তাহার অবশিষ্ট দিনগুলা বড় ভারী হইয়া উঠিয়াছে। সেদিন সকালে বৈকুণ্ঠ জীবনের শেষ ডাক শুনিতে পাইলেন। সর্বাঙ্গে কি একপ্রকার নূতন অস্বস্তি লইয়া জাগিয়া উঠিয়া গৃহিণীকে শয্যাপার্শ্বে ডাকিয়া মানভাবে একটুখানি হাসিয়া কহিলেন, ছোটবীে, আমার ত সময় হয়েছে, তাই একটু এগিয়ে চললুম। তোমার যতদিন না। আসা হয় ততদিন আমার ছেলে দুটিকে দেখো। তোমার হাতেই তাদের দিয়ে গেলুম। স্বামীর শীর্ণ হাতখানি দুই হাতের মধ্যে লইয়া ভবানী নীরবে কঁাদিতে লাগিলেন । বৈকুণ্ঠ কহিলেন, গোকুলকে রেখে তার মা মারা গেলেআমার কিছুতেই আর দ্বিতীয় সংসার করবার ইচ্ছা ছিল না। আমি কোনমতেই বিয়ে করতুম না ; কিন্তু যখন দেখলুম। আমি একা, গোকুলকেই হয় ত বঁাচাতে পারব না, তখনই শুধু বড় কষ্টে, বড় ভয়ে ভয়ে রাজী হয়েছিলুম। ভগবান আমার মনের কথা জানতে পেরেছিলেন। তাই এমন স্ত্রী দিলেন যে, কোনদিন কোন দুঃখ পাই নি। শুধু বিনোদ যদি আমার শেবকালটায় এত দুঃখ না দিত, তা হলে কত সুখেই না। আজ যেতে পারতুম। বলিতে বলিতেই তঁহার মান চক্ষু দুটি অশ্রুসিক্ত হইয়া উঠিল। ভবানী আঁচল দিয়া তাহা মুছাইয়া দিলেন, কিন্তু তাহার নিজের দুইচক্ষু অশ্রুজলে ভাসিয়া যাইতে লাগিল।